১৯৭১ সালের এই দিনটিতে পাকিস্তানিদের শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে সর্বাত্মক লড়াই করে বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জন্ম নেয় নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। এই দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে টাঙানোয় কামারখন্দ উপজেলাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কামারখন্দ উপজেলা বিএনপি আজ বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রেখে দলীয় পতাকা উত্তোলন করে দলীয় কার্যালয় তালা দিয়ে হাওয়া!উপজেলা বিএনপি'র নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। আজ স্বাধীনতা দিবসে অনেকেই হয়তো জাতীয় পতাকা ওড়ান নাই- সেটা একধরনের বিষয়,কিন্তু পতাকা উড়িয়ে আমাদের বিজয় দিবসে শোক জানানোর ধৃষ্টতা বরদাশত করবেন- এমন বাংলাদেশি আছেন কী! উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসক, স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি- কেউ কি এটা মেনে নেবেন? উল্লেখ্য, জাতীয় দিবসে ও প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাষিত প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়। শুধু অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এ ছাড়া সরকার নির্দেশিত দিনগুলোতেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন কিংবা অর্ধনমিত রাখা হয়। আরো উল্লেখ্য যে,জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননা প্রদর্শন করা বা জাতীয় পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন না করলে ২০১০ সালের ২০ জুলাই প্রণীত আইন অনুযায়ী ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
জাতীয় পতাকার অবমাননা করার অর্থ মুক্তিযুদ্ধ কে অবিশ্বাস করার সামিল। মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বলেন,লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের সার্বভৌমত্বের নিদর্শন লাল সবুজের পতাকা। এই পতাকা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় শহীদের বুকের তাজা রক্তে সিক্ত সবুজ জমিনের কথা। স্মরণ করিয়ে দেয় সেসব মানুষের কথা যারা নির্দ্বিধায়, অকাতরে প্রাণ দিয়েছে এই ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের ভূখণ্ডের মুক্তির জন্য। লাল সবুজের এই পতাকা তাই আমাদের হৃদয়ে জাগায় দেশপ্রেম, আর দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার প্রেরণা। জাতীয় পতাকাকে অবমাননা বা অসম্মানকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তার অপব্যবহার রোধে আমাদের সরকারি তৎপরতার পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও দায়িত্বশীল হতে হবে। এবিষয়ে বিজয় দিবসের পতাকা উদযাপন কমিটির সভাপতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমা খাতুন বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথে আমি ঘটনার স্থান পরিদর্শন করি এবং ঘটনা সত্যতা পাওয়া যায়। বিএনপি নেতাকর্মীদের অবগত করলে তারা বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ঘটেছে এবং ভূল শিকার করেছে।