হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ফাঁস ও শরীরে-পায়ে আঘাত করে হত্যার পর তাকে আম বাগানের মধ্যে কে বা কাহারা ফেলে রেখে চলে যায়।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ পাকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল মুমিন বাকীর আম বাগান থেকে সিরাজুল ইসলাম (৬৫) নামে পাকুড়িয়া কাথাইল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ওই গ্রামের দক্ষিণ পাশে মাঠের মধ্যে একটি আম বাগানে মাটিতে পড়ে থাকা লাশটি উদ্ধার করা হয়। হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ফাঁস ও শরীরে-পায়ে আঘাত করে হত্যার পর তাকে আম বাগানের মধ্যে কে বা কাহারা ফেলে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছে। খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন।  

উদ্ধার হওয়া লাশটি উপজেলার দক্ষিণ পাকুরিয়া গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম। পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ পূর্বে পাকুড়িয়া-কাথাইল সিরাজুল ইসলাম হাফেজিয়া উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার তহবিল নিয়ে পরিচালনা কমিটির সভা হয়। ওই সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার মাঝে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলামের সাথে কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে সভাপতি মিজানুর রহমান,সাধারণ সম্মাদক গোলাম আজম জিন্নাহ,সহ-সম্পাদক আব্দুল মুমিন বাকী,সদস্য আব্দুল মতিন ও মাদ্রাসার শিক্ষক হাফিজ আলাউদ্দীর এর সাথে মনোমালিন্যের একপর্যায়ে  হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওইদিনের পর থেকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে প্রতিষ্ঠাতার ঝগড়া-বিবাদ লেগেই রয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল ইসলামকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার পর মাঠের মধ্যে একটি আম বাগানে লাশ ফেলে রেখে চলে যায় কে বা কাহারা।

রোববার সকালে প্রতিবেশীরা মরদেহ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশে খবর দেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল মতিন বলেন, এক সপ্তাহ পূর্বে মাদ্রাসায় সভা চলাকালিন সময়ে হাতাহাতির ঘটনা সত্য। তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা আমার জানা নেই। নিহত সিরাজুল ইসলাম শনিবার দিবাগত রাত দেড়টায় আমার বাড়ীতে আসার জন্য ফোন করে। সামাজিকতা রক্ষার জন্য তাকে বারণ করতে পারিনি। মাদ্রাসায় অনুদান যারা দিতে চেয়েছে, তাদের তালিকা আমাকে দিয়ে নিজের বাড়ীর উদ্দেশ্যে চলে যায়। সকালে শুনতে পাই তাকে কে বা কাহারা গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে।

নিহতের স্ত্রী ও মামলার বাদী শেফালী বেগম বলেন, কি অপরাধ করেছে আমার স্বামী। আমাদের কোনো সন্তান নেই। যা কিছু করেছে তা এলাকার মানুষের জন্যই করেছে। তারপরও আমার বৃদ্ধ স্বামীকে নির্মমভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।