কুলাউড়ায় জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে আপন ভাতিজাদের মারধরে আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন চাচা। শুক্রবার বিকালে উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিয়াসনগর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, দক্ষিণ গিয়াসনগর এলাকায় বাড়ির জায়গা নিয়ে বাচ্চু মিয়া ও জিতু মিয়া নামক দুই ভায়ের মধ্যে দ্বন্ধ চলছিলো। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) জুম্মার নামাজের পর তাদের বয়োবৃদ্ধ পিতা হারিছ মিয়া পঞ্চায়েতের মুরব্বিদের নিয়ে বিষয়টি সরেজমিনে দেখে উঠোন দু’ভাগ করে খুঁটি পুতে আসেন। কিন্তু বিকালে প্রবাসী জিতু মিয়ার স্ত্রী-সন্তানরা মীমাংশাটি না মেনে পুরো উঠোনটি তাদের ক্রয়কৃত জায়গা দাবী করে পুতে রাখা খুঁটি তুলে ফেলে দেন। এ নিয়ে দুই পরিবারে তুমুল বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
এক পর্যায়ে জিতু মিয়ার ছেলে রনি মিয়া গংরা তার আপন চাচা বাচ্চু মিয়ার মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুঠিয়ে পড়েন। রনি গংদের লাঠির আঘাতে বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী সুরমা বেগমও আহত হয়েছেন। তাৎক্ষনিক বাচ্চু মিয়ার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। আহত বাচ্চু মিয়ার অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় বাচ্চু মিয়ার ছেলে বদরুল ইসলাম বাদী হয়ে চাচাতো ভাই রনি মিয়া (২২), জনি মিয়া (১৯), চাচাতো বোন বিথি আক্তার (১৮) এবং চাচী হেনা বেগমকে বিবাদী করে কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বদরুল ইসলাম বলেন, বিকালে তিনি স্থানীয় বিজয়া বাজারে ছিলেন। এসময় চাচাতো ভাই-বোন ও চাচী মিলে তার পিতা-মাতাকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও বেদড়ক পিঠিয়ে আহত করেছেন। খবর পেয়ে তিনি গাড়ি নিয়ে এসে পিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। পিতার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে নিয়ে সিলেট হাসপাতালে যাচ্ছেন। এব্যাপারে প্রবাসী জিতু মিয়ার স্ত্রী হেনা বেগম মুঠোফোনে জানান, বাড়ির উঠোনের জায়গাটি তারা ক্রয় করেছেন। কিন্তু বাচ্চু মিয়া দীর্ঘদিন থেকে সেটি দখল করে রেখেছেন। তিনি ছেলেকে নিয়ে বাইরে ছিলেন, বাড়িতে এসে এই ঘটনা শুনেছেন। তারা কেউই বাচ্চু মিয়াকে আঘাত করেননি। উল্টো বাচ্চু মিয়া গংরা তার ছেলেকে মারধর করেছে। তিনি এখন ছেলেকে নিয়ে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় বাচ্চু ও জিতু মিয়ার পিতা হারিছ মিয়া বলেন, তিনি নিজে উপস্থিত থেকে বিরোধকৃত উঠোনটি দুই ভাগ করে দিয়ে এসেছেন। কিন্তু এরপরও তারা মারামারি করলো। উঠোনটি বাচ্চু-জিতু দুজনের, তাকে না জানিয়ে জিতু পুরো উঠোনটি নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করে ফেলছে। এটা নিয়েই ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। কুলাউড়া থানার এসআই (মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা) মো: নিয়াজুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, বাড়ির ভেতরের জায়গা নিয়ে আপন চাচা-ভাতিজার মারামারি হয়েছে। বাচ্চু মিয়ার মাথায় আঘাতের ক্ষত রয়েছে। তবে, দা দিয়ে না লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তা সঠিক বুঝা যাচ্ছেনা। মেডিকেল রিপোর্ট পেলে বুঝা যাবে। শুনেছি বাচ্চু মিয়ার ভাতিজাও আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন। তদন্তক্রমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।