সামনে মাথায় বুলেটবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রুবেল। বাম চোখের উপড়ে একটি বুলেট কপাল ভেদ করে মাথার খুলিসহ উড়ে যায়। কলিগরা গ্রামের বাড়িতে খবর দিয়ে ওই দিনই রাত ২টার দিকে রুবেলের নিথর দেহ নিয়ে আসে উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের হাছলা গ্রামের বাড়ীতে।

কোটা বিরুধী আন্দোলন কেড়ে নিল কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের টগবগে তরুন রুবেলের স্বপ্ন। একটি বুলেট রুবেল(২৩) এর স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে।গেলো (১৯জুলাই) শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টায় রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বর জিরো পয়েন্টের

সামনে মাথায় বুলেটবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রুবেল। বাম চোখের উপড়ে একটি বুলেট কপাল ভেদ করে মাথার খুলিসহ উড়ে যায়। কলিগরা গ্রামের বাড়িতে খবর দিয়ে ওই দিনই রাত ২টার দিকে রুবেলের নিথর দেহ নিয়ে আসে উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের হাছলা গ্রামের বাড়ীতে।

রাত আড়াইটায় বেলংকা মুন্সিবাড়ি জামে মসজিদে রুবেলের জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয় স্থানীয় পঞ্চগ্রাম কবরস্থানে।উপজেলার হাছলা পাথারিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ফরিদ উদ্দিনের ৪ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে ৫ নম্বর সন্তান রুবেল। পুরো নাম তরীকুল ইসলাম রুবেল।গ্রামের বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বাবা কৃষিকাজ করে সংসারের ভার সইতে পারছেন না দেখে পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য ৭বছর আগে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকায়।

নিজের একান্ত চেষ্টায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে বছর তিনেক আগে চাকুরি নেন মিরপুর ১৩ মন্দির গেইট এলাকার রাকিন ডেভলাপমেন্ট কোম্পানীর রাকিন সিটিতে। দ্বায়িত্ব পান ইস্টিবি অপারেটরের।কোটাবিরুধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন না রুবেল।ঘটনার দিন অফিসের কাজ সেরে রাত ৮টায় বের হয়ে ৫৬৯ সেনপাড়া পর্বতা, মিরপুর-১৪ তে নিজ বাসস্থানে যাবার সময় গুলিবিদ্ধ হয় রুবেল।

রুবেলের গ্রামের বাড়িতে গেলে দেখা যায় পুরো পরিবারসহ আশেপাশে শোকের মাতম। এলাকায় রুবেল খুব জনপ্রিয় ছিল। প্রতি ঈদে এলাকায় এসে গরীব দু:খীদের খোঁজ খবর নিতো। সাধ্যমত সহযোগীতার সুনাম আছে রুবেলের। রুবেলের বাবা ফরিদ উদ্দিন কান্নাজড়িত কন্ঠে মর্নিংপোস্ট'কে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে।রুবেলের স্বপ্ন ছিল বাড়িতে একটি পাকাঘর তৈরি করবে। মৃত্যুর আগের দিন আমাকে ফোনে বলেছে কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়ি আসবে। 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার ছেলে তো লেখাপড়া করেনা, কোনও রাজনীতির সাথেও জড়িত না। কেন তাকে এভাবে মেরে ফেলা হলো। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।কলেজ পড়ুয়া রুবেলের ভাই জুয়েল এই প্রতিবেদককে রুবেলের মোবাইলের ছবিগুলি দেখিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

দেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সাথে আছে রুবেলের অসংখ্য সেলফি। শরীফুল, মোস্তাফিজ, মেহেদী মিরাজ, সাইফুদ্দিন, নাজমুল হোসেন শান্ত সহ প্রায় সকল ক্রিকেটারের সাথে আছে রুবেলের সেলফিট।জুয়েল আরও জানান,রুবেলের দাফনের পর তাড়াইল থানা থেকে ফোন করে তথ্য নিয়েছে।তাছাড়া এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ খোঁজ নেয়নি।