আপনি কি জানেন, গ্যাসের দাম ৬৯০ টাকার ওপরে কখনো হয়নি?

আপনি কি জানেন, গ্যাসের দাম ৬৯০ টাকার ওপরে কখনো হয়নি? বিগত ১২ বছর ধরে সরকার যে গ্যাস উৎপাদন করছে, তার একক ব্যয় ঠিক আজ পর্যন্ত ৬৯০ টাকা। কিন্তু সেই গ্যাস কখনো সরাসরি ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছায় না। আর যদি কোনোভাবে পৌঁছায়ও, তখন সেটার দাম হয়ে যায় ১৪৫০ থেকে ১৫০০ টাকা! ভাবুন, প্রায় দ্বিগুণ দাম! এই বিশাল পার্থক্যের কারণ কী?

বাংলাদেশে গ্যাস খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অসাধু ব্যবসায়ীদের ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেট। সরকার যাদের জন্য ৬৯০ টাকায় গ্যাস সরবরাহ করছে, তারা সেই গ্যাস ভোক্তার কাছে বিক্রি করছে প্রায় ১৫০০ টাকায়। কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির একচ্ছত্র আধিপত্য, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অসহযোগিতা, এবং এক শ্রেণির কর্মকর্তার মদতে এমন ভয়াবহ অনিয়ম এখন নিত্যদিনের চিত্র।

যমুনা টিভির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে—কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (CAB)-এর পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্য মতে, গ্যাস সিলিন্ডার খাতে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। প্রতিটি লেগাল অনুমোদন, বিতরণ লাইসেন্স এমনকি রিফিল প্লান্ট অনুমোদন পর্যন্ত ঘুষ ছাড়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয়, কিছু সংস্থা চুক্তিভিত্তিক দামে গ্যাস না পেয়ে অবৈধভাবে সংগ্রহ করে কালোবাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে।

মানুষ ঠকছে, জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে এই সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ মানুষের ন্যায্য গ্যাস ব্যবহারের অধিকার হরণ হচ্ছে। অনেক পরিবার প্রতিদিন অসহনীয় খরচে রান্নার গ্যাস কিনতে বাধ্য হচ্ছে। আবার গ্যাসের মানহীন সিলিন্ডার ব্যবহারে দুর্ঘটনার হারও বাড়ছে। অথচ, কেউ জবাবদিহিতার আওতায় নেই।

এত কিছু জানার পর আমার প্রশ্ন থেকে যায়,

২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরও কেন এরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে? আমরা কী ধরে নেবো, আজো আমাদের দেশে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি?

এই অন্যায়ের বিচার কে করবে? আমরা কি সারাজীবন এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে থাকবো?
প্রশ্নঃ ডক্টর ইউনুস স্যারের কাছে।

একজন মুরুব্বী যখন কুঁজো হয়ে কাঁধে গ্যাস সিলিন্ডার বহন করেন— ৬৯০ টাকার গ্যাস সিলিন্ডার ১৫০০ টাকায়—তখন শুধু শরীর না, গোটা জাতিই কুঁজো হয়ে যায়।

এখনও যদি আমরা চুপ থাকি, তাহলে কালকে এই গ্যাস নয়, পানি, বাতাস, আলো—সবকিছু কিনতে হবে সিন্ডিকেটের কাছ থেকে!

@Mohammad Ali