তারা বলছেন, নতুন সরকার অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যেমন উদ্যোগ নিচ্ছে, চালের ক্ষেত্রেও তা প্রয়োজন। তারা বাজারে গিয়ে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এদিকে শুল্ক কমলেও আলু ও পেয়াঁজের দামে কোন প্রভাব পড়েনি। আগের মতোই বৃদ্ধি পাওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে এ পণ্য দু’টি। তবে সবজি বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। সরবরাহ বাড়ায় বাজারে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে।

স্বৈরাচার সরকার পতনের আগে বেড়েছিল চালের দাম। কিন্তু এখনো দাম কমেনি। বরং নতুন করে চালের দাম বাড়ার শঙ্কার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। প্রধান এই খাদ্যপণ্যটির চড়া দাম নিয়ে দারুণ বিপাকে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ।

তারা বলছেন, নতুন সরকার অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যেমন উদ্যোগ নিচ্ছে, চালের ক্ষেত্রেও তা প্রয়োজন। তারা বাজারে গিয়ে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এদিকে শুল্ক কমলেও আলু ও পেয়াঁজের দামে কোন প্রভাব পড়েনি। আগের মতোই বৃদ্ধি পাওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে এ পণ্য দু’টি। তবে সবজি বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। সরবরাহ বাড়ায় বাজারে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, আগের কয়েক সপ্তাহের মতোই মোটা চালের কেজি ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে আবার অধিকাংশ দোকানেই মিলছে না মোটা জাতের চাল। যে কারণে অনেক ক্রেতাকে বাধ্য হয়ে মাঝারি মানের চাল কিনতে হচ্ছে। এদিকে, মাঝারি চাল বিআর-২৮ ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। পাশাপাশি মানভেদে সরু চালের কেজি ৭০ থেকে ৭৮ টাকা।

মাস দেড়েক আগেও মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ ও মাঝারি চালের কেজি ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর সরু চাল বিক্রি হতো কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭৬ টাকায়। অর্থাৎ, চালের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।গত বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ ও আলুর শুল্ক কমিয়েছে সরকার। তবে একদিনের ব্যবধানে এসব পণ্যের দামে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। প্রকৃতপক্ষে এর প্রভাব পড়তে কিছুটা সময়েরও প্রয়োজন।

এ অবস্থায় গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে সোনালি মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৩০ টাকা কমে ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ১০ টাকা কমে ৩০০ টাকা ও সাদা লেয়ার কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি সিম ২০০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকার ভেদে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ও গাজর ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনেপাতা কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৮০ টাকা কমে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।বাজারগুলোতে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা ও আলু কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।বাজারে গরুর গোশত প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার গোশত ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির গোশত প্রতি কেজি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারগুলোতে সব ধরনের মাছের দাম কমেছে। এসব বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৩০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা, মৃগেল মাছ ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকা, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় মাছ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা ও কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে ৫ কেজি সোয়াবিন তেল ৮১৮ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা ও নাজির শাইল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।