ছাতকের জাউয়াবাজার ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামে জানাযার পর দোয়া না পড়ায় লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার গণিপুর গ্রামের কাজি নজরুল ইসলাম দোলু ও মাওলানা কাজি খালেদ আহমদের মায়ের জানাযার নামাজের পর দোয়া না পড়ায় লাশের খাটিয়া নিয়ে টানাটানি করে একদল ফুলতলি মসলকের মুসল্লী।
ফুলতলী মসলকের দাবি জানাযার পর দোয়া করতে হবে, দোয়া না করলে লাশ দাফন করা যাবেনা। কওমি আলেমদের মতে জানাযার পর লাশ দাফন করে দোয়া করা। নজরুল ইসলাম দোলু ও মাওলানা কাজী খালেদ কওমি অনুসারী।
জানায়র পর দোয়া করতে শক্তি প্রদর্শন করে ফুলতলী মসলকির মুসল্লীরা।
লাশ বহনকারী খাটিয়া কবরস্থানের দিকে গেলে কিছু মুসল্লী খাটিয়া বাধা প্রদান করে, লাশ বহনকারী খাটিয়ায় ধরে আটকানোর চেষ্টা করে।
এসময় বিভিন্ন এলাকার মানুষের সহযোগিতায় লাশ দাফনের জন্য রওনা হলে, গণিপুর গ্রামের কিছু মানুষের উস্কানীমূলক কথা বার্তা কেনো দোয়া হলোনা, তাই লাশ দাফন করতে দেবেনা বলে লাশের কাটিয়া দরে আটকানোর চেষ্টা করে এবং গ্রামের যুবকরা ইট পাটকেল মারা শুরু করে দেয় তাতে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়।
এমন পরিস্থিতিতে মৃত মহিলার আত্মীয় স্বজন ও পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় দাফন সম্পন্ন করে মাওলানা খালেদ ও উনার পরিবারের সবাইকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসেন।
ইতিমধ্যে লাশের কাটিয়া দরে টানাটানির একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়, এনিয়ে এলাকার পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়।
পরের দিন শুক্রবার মৃত মহিলার আরেক ছেলে কাজি খুর্শিদ মিয়া জুম্মার নামাজে মসজিদে গেলে, গ্রামের মনির মিয়া উনাকে ডেকে বলেন তোমরা আর এই মসজিদে আসবে না, তোমাদেরকে পঞ্চাইত থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। গ্রামের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কাজী খুর্শিদ মিয়ার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে।
মাওলানা খালেদ আহমদ এর ছোট ভাই প্রবাসী কাজি নজরুল ইসলাম দোলু প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন সারা বিশ্বে তথা বাংলাদেশের হকপন্হী সব আলেমগণের মতামতের ভিত্তিতে জানাযার পরে দোয়া করা বিদায়াত।
জানাযার পরে লাশ দাফন করে দোয়া করা ইসলামের বিধান। কিছু দুষ্কৃতকারীরা বারবার ইসলামের অনুশাসন মতো চলতে বাধা দেয়। কয়েক বছর আগে আমার এক ভাতিজি, তার পর একজন চাচা মারা গেলে জানাযায় গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
জানাযার পর দোয়া করার বিধান মানতে হবে না মানলে আমাদের বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসে। সবসময় আমাদের পরিবারের সাথে এমন জঘন্য আচরন করে আসছে একদল নামধারী মুসল্লী। কাজী নজরুল ইসলাম আরও বলেন আমরা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশিত পথে চলতে চাই, জেনেশুনে কোন বিদায়াত করতে চাইনা।
ছাতক থানার ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দের সাথে মোবাইলে ফোন কথা হলে তিনি বলেন এই ধরনের ঘটনা আমরা শুনেছি। কোন ব্যক্তিকে পঞ্চায়েত এক ঘরে করে রাখার নিয়ম নেই। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।