বুধবার (১৩ আগষ্ট) বিকাল ৪ টার দিকে জেলার পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পাংশা মডেল থানা পুলিশ অবরুদ্ধ স্কুল শিক্ষককে উদ্ধার করে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের নেই কোনো অভিযোগ।
এসময় স্কুলের শিক্ষার্থী সহ বিক্ষুদ্ধ জনতা স্কুল শিক্ষক ফজলু প্রামাণিকের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল (ঐড়হফধ ঈই ঞৎরমমবৎ) ভাংচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
অভিযুক্ত শিক্ষক ফজলু প্রামাণিক মৌরাট ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার (১১ আগস্ট) বিকালে বাগদুলী বাজার সংলগ্ন ইসলামী ব্যাংক শাখার বিল্ডিংয়ে অবস্থিত ফজলু প্রামাণিকের কোচিং সেন্টারে এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান ফজলু প্রামানিক। এ সময় ঘটনা দেখে ফেলেন স্কুলের এক শিক্ষার্থী। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার বিকালে স্কুল ছুটির পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা ফজলু প্রামাণিককে অবরুদ্ধ করে বিচারের দাবি করে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। এরআগে ২০১০ সালে একবার সে এ ধরণের বিষয় নিয়ে হেনস্থার শিকার হয়।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, এমন কোনো ঘটনা আমাদের মেয়ের সাথে ঘটেনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
স্থানীয়রা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ ফজলুল রহমান দীর্ঘদিন ধরে কোচিং বাণিজ্যের আড়ালে ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সকালে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে কোচিং সেন্টারে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এসময় ঘটনাটি এক ছাত্র দেখে বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর জানালে দুপুরের মধ্যে উত্তাল হয়ে উঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন। বিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে উত্তেজিত জনতা। পাংশা মডেল থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে পুলিশ পাহাড়ায় ওই শিক্ষককে থানায় নেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে ওই শিক্ষককের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় জনতা।
দশম শ্রেণির ছাত্র বাঁধন মন্ডল বলেন, ফজলু স্যার মৌরাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয় টাকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। এ শিক্ষক কোচিং সেন্টারের আড়ালে ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তার মতো শিক্ষকের এ বিদ্যালয়ে থাকার দরকার নেই, তাই আমরা তার পদত্যাগের দাবি করছি।
বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাত্রীর সাথে ওই শিক্ষকের আপত্তিকর অবস্থার বিষয়টি আমাকে জানায়। কিন্তু হঠাৎ বিকালে এলাকাবাসী স্কুলে এসে ওই শিক্ষক অবরুদ্ধ করে এবং তার মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ স্কুল শিক্ষকদের নিয়ে জরুরী মিটিং কল করেছি। আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।