এরা সম্পর্কে মা এবং ছেলে। তাদের জন্মের তারিখ অনুযায়ী বয়সের পার্থক্য মাত্র ৮ বছর ৫ মাস ১৬ দিন। পারভীন আক্তার এর জন্ম তারিখ (১৫ জানুয়ারি) ১৯৭১ এবং হাবিবুর রহমান এর জন্ম তারিখ (০১ জুলাই) ১৯৭৯। পারভীন আক্তারের চাকরিতে যোগদানের তারিখ হলো (১৬ অক্টোবর) ১৯৮৯ এবং হাবিবুর রহমানের চাকরিতে যোগদানের তারিখ হলো (১৩ এপ্রিল) ২০০৬। সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পারভীন আক্তারের যোগদানের তারিখ হলো (৬ এপ্রিল) ২০১৯, IPEMIS ID NO- 9150205030410 এবং হাবিবুর রহমানের যোগদানের তারিখ হলো (২১ জানুয়ারি) ২০১৯, IPEMIS ID NO-9150205020106।
Integrated Primary Education
Management Information System (IPEMIS) ও বিদ্যালয়ের মাসিক কার্যবিবরণী এর তথ্য অনুযায়ী নিশ্চিত করা হয়।
সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, তার চাকরি হয়েছে আমার আগে এবং আমি চাকরি করি আমার বয়সে। তার বাবা মা তার বয়স কিভাবে লিখছে সেটা তো আমার জানার কথা না। তবে আমি জানি আমার জন্মের পারে ওনি লেখা পড়া করছে এবং এসএসসি পরিক্ষা দিছে। আমি তখন আমার বাবার সাথে স্কুলে যাই। কার বয়সে কতো পার্থক্য তা দেখিনি। তার বাবা-মা এবং শিক্ষকরা কিভাবে বয়স দিছে এটা সে বলতে পারবে।
সহকারী শিক্ষিকা পারভীন আক্তার বলেন, আমার ছেলে জন্ম হওয়ার পরে আমি পড়াশোনা করছি। এটা ওই সময় খেয়াল করি নাই এবং শিক্ষকরাও খেয়াল করে নাই। আমি মেট্রিক পাশ, আইয়ে পাশ ও বিয়ে পাশ করছি ও সময় ভুলটা ধরতে পারি নাই। এহন আপনারা আমারে ধরাইছেন।
সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার ডলি বলেন, তারা অন্য স্কুলে ছিল, আমার স্কুলে যোগদান করছে ২০১৯ সালে তখন আমি ছিলাম না। ১৯ সালের ডিসেম্বরে আমি যোগদান করেছি। এই স্কুলের আগে তারা গুলিসাখালী ইউনিয়নে চাকরি করেছে ওখানের শিক্ষকরা সকলেই বিষয়টি জানে। আমাকে অনেকে তাদের বয়সের বিষয়ে জিগ্যেস করেছে তখন আমি দেখি যে আসলেই সমস্যা। এটা কিভাবে হলো সঠিক বলতে পারবো না।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস আলী জানান, এবিষয় আমি জানিনা। তাদের যে লিগাল কাগজপত্র আছে সেগুলো দিয়ে তারা চাকরি পেয়েছে। এই অথরিটি তো আমি না। এখানে নতুন এসেছি তাই আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারবো না। যদি তাদের বয়সের সমস্যাটি প্রমাণিত হয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের উর্ধতন কতৃপক্ষ বিধিবিধান অনুযায়ী যথাযথ ব্যাবস্থা নিবে।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনসুর হেলাল বলেন, তাদের বয়সের ব্যপারে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য; গত (১৭ আগস্ট) মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের ৬৫ নম্বর সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই সহকারী শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমান মঠবাড়িয়া পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি থাকায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান করান না, শিশু শিক্ষার্থীদের মারধর করেন এবং বিদ্যালয়ে নাম মাত্র কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেনসহ নানা অনিয়মের বিষয় উল্লেখ করে ওই শিক্ষকের বদলি চেয়ে সূর্যমনি গ্রামের এলাকাবাসীর পক্ষে ৫জন নারী ও পুরুষের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর। এ নিয়ে চলতি মাসের (২২ ও ২৩ আগস্ট) বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।