নলছিটির ফলপট্রি সড়কের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করছিলেন কালাম মিয়া। কথা হলে তিনি জানান, নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হাজার খানেক তালগাছ আছে। এসব স্থান থেকে প্রতিটি তাল গাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় কিনে আনি। তাল গাছে ছোট বড় মিলে ৩০০ থেকে ৪০০টি তাল থাকে। প্রতিদিন খুব ভালো বিক্রি হয় তাল শাঁস। ১পিচ তাল শাঁস ৪-৫টাকায় বিক্রি করা হয়। আর ১টি তাল ১৫ থেকে ২০টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। দিনে গড়ে ২৫০টি থেকে ৩০০টি বিক্রি করি। এতে প্রতি তালে লাভ হয় ৪ থেকে ৫ টাকা। তিনি জানান, এটি মৌসুমী ব্যবসা। এখন থেকে শুরু করে আগষ্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে এ ব্যবসা।

সারাদেশের মতো ঝালকাঠিতেও বইছে টানা তাপদাহ। এ তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিন-রাতের এই খরতাপ থেকে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে রসালো তালের শাঁসের কদর বেড়েছে ঝালকাঠি জেলাজুড়ে। 

এদিকে জেলার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছে তাল শাঁস দেহকে রাখে ক্লান্তিহীন ও নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে। রোদের তাপমাত্রা বাড়ছে আর সেই সঙ্গে বাড়ছে তালের শাঁসের ব্যাপক চাহিদা। গ্রীষ্মের অসহনীয় গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও তৃষ্ণায় স্বস্তি এনে দিচ্ছে কচি তালের শাঁস। 

দাম কম হলেও তাজা ও ফরমালিনমুক্ত তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে, চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ার পাশাপাশি মুখের রুচি বাড়ায়। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টি চাহিদাও মিটছে তালের শাঁসে।

সোমবার (৩জুন) সরেজমিন  ঝালকাঠির, কলেজ মোড়, ফায়ার সার্ভিস মোর, নলছিটি , মানপাশাসহ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, তালের পসরা সাজিয়ে বসেছে মৌসুমী বিক্রেতারা। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছেন তালের শাঁস। আবার অনেকেই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন রসালো এ ফল। মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও।

নলছিটির ফলপট্রি সড়কের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করছিলেন কালাম মিয়া। কথা হলে তিনি জানান, নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হাজার খানেক তালগাছ আছে। এসব স্থান থেকে প্রতিটি তাল গাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় কিনে আনি। তাল গাছে ছোট বড় মিলে ৩০০ থেকে ৪০০টি তাল থাকে। প্রতিদিন খুব ভালো বিক্রি হয় তাল শাঁস। ১পিচ তাল শাঁস ৪-৫টাকায় বিক্রি করা হয়। আর ১টি তাল ১৫ থেকে ২০টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। দিনে গড়ে ২৫০টি থেকে ৩০০টি বিক্রি করি। এতে প্রতি তালে লাভ হয় ৪ থেকে ৫ টাকা। তিনি জানান, এটি মৌসুমী ব্যবসা। এখন থেকে শুরু করে আগষ্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে এ ব্যবসা।

অপর তালের শাঁস বিক্রেতা আদু মিয়া বলেন, গরমের সাথে সাথে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়েছে। প্রতি বছর বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠের শেষপর্যন্ত তালের শাঁস বিক্রি করি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৫০০ তালের শাঁস বিক্রি করা হয়।

মানপাশা এলাকার তালের শাঁস বিক্রেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, একটি তালে দুটি বা তিনটি শাঁস থাকে। কেউ একটু তরল, আবার কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করেন। আমি প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কাঁদি (ছড়া) তাল বিক্রি করি। গাছ থেকে তালের কাঁদি কেটে বাজারে এনে বিক্রি করা হয়। কষ্ট হলেও বেশ লাভ হয়।

তালের শাঁস কিনতে আসা রাসিদা বেগম বলেন, তালের শাঁস একটি সুস্বাদু ফল। গরম থেকে এসে তালের শাঁস খেতে ভালোই লাগে। এবারের প্রচণ্ড দাপদাহে বেড়েছে তালের শাঁসের চাহিদা।

নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স'র টিএইচ ডা. শিউলী পারভীন বলেন, তীব্র গরমে শরীর ও পেট ঠান্ডা রাখে তালের শাঁস। প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁসে ০.৮ গ্রাম খাদ্যোপযোগী খনিজ পদার্থ, ২০.৭ গ্রাম শর্করা, ০.৮ গ্রাম আমিষ, ০.৫ গ্রাম আঁশ আছে। এছাড়া ০.৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। অবাক করার মতো খাদ্যশক্তি আছে। প্রায় ৮৭ কিলো ক্যালোরি ও ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকায় তালের শাঁস হাড় গঠনেও ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে তালের শাঁস নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে থাকে।