টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন (স্বপন ফকির)— এর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও পত্রিকার মাধ্যমে একটি সংবর্ধনা মঞ্চের কিছু ছবিকে কেন্দ্র করে মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজ শিক্ষকবৃ ও স্থানীয়রা।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে অন্যান্য শিক্ষক, গর্ভনিং বডির সদস্য ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ নিন্দা জানান। তারা জানান- ফকির মাহবুব আনাম স্বপন (স্বপন ফকির) শমশের ফকিরের নাতী ও কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত গায়ক, সুরকার জাসসের প্রতিষ্ঠা লোকমান হোসেন ফকিরের ভাতিজা। ২০১১ সালে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় ফকির মাহবুব আনাম স্বপনকে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৯ সালে রাজনৈতিক নিষিদ্ধ কার্যক্রমের আওয়ামী লীগ সরকারের টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছোট মনিরকে ভূঞাপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সংবর্ধনা দেয়ার উদ্যোগ নেন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তাদের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজ থেকে এমপি ছোট মনিরকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বলা হয়।

বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে একাধিকবার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অপারগতা করলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নানা ধরণের চাপসহ কলেজের সকল শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধের হুমকি দিতো ছোট মনিরের অনুসারীরা। শুধু তাই নয়, এমপিকে সংবর্ধনা না দিলে কলেজটিকে বিএনপি-জামায়াত তথা রাজাকারদের কলেজ হিসেবেও আখ্যা দেয়ার হুমকি দেয়া হতো।

এ ব্যাপারে শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজ্জামান বলেন- ২০১৯ সালে ফকির মাহবুব আনাম স্বপন (স্বপন ফকির) কলেজটির সভাপতি ছিলেন। সে সময় সাবেক এমপি ছোট মনিরের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদেরকে ছোট মনিরকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য বাধ্য করে এবং বিএনপি-জামায়াত তথা রাজাকারদের কলেজ আখ্যা দিয়ে কলেজটি বন্ধ করার হুমকি দেন। পরে বাধ্য হয়ে তাকে সংবর্ধনা দিতে হয়। পরে সভাপতি স্বপন ফকির অত্র কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদরে অনুরোধে এবং আওয়ামী লীগের চাপে কলেজটি রক্ষায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন, অনুষ্ঠানটি কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছিল না। ওই অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও মঞ্চের ছবিকে কেন্দ্র যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে এটা ঘৃণিত কাজ। এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উলে¬খ্য- সম্প্রতি টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) আসাদুল ইসলাম ওরফে আজাদ। তার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ডামি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়া, আয়নাঘরের মাষ্টারমাইন্ড ও হাজারো গুম-খুনের নায়ক বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের ব্যবসায়ীক অংশীদার হওয়া এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগ এনে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি তাকে বহিষ্কার করে। এরপ্রেক্ষিতে তিনি ক্ষোভে বিএনপি নেতাদের নামে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন মধুপুর-ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।