লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. শিপলু সরকারের বিরুদ্ধে চিকিৎসা অনিয়ম, রোগীর প্রতি অমানবিক আচরণ এবং ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি দায়িত্বের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে ২ জুলাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখায় যায়,ইমারজেন্সি ডিউটি সময় দুপুরে,বিকাল ও সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ইনসাফ ল্যাব এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগি দেখে আবার হাসপাতালে ডিউটি শুরু করেন। স্থানীয় ইনসাফ ল্যাব এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার রোগির দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্টাফ মো: ফয়সাল। ইমারজেন্সি ডিউটির সময় হাসপাতাল না থেকে বাহির রোগি দেখার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা: সব্যসাচীকে জানালে তিনি বলেন ইমারজেন্সি ডিউটি সময় বাহিররে রোগির দেখার সুযোগ নাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। ইমারজেন্সি ডিউটি রেখে বেসরকারী ল্যাবে চেম্বার করতে গেলে বিকাল ৩.১০ মিনিটে পেট ব্যাথা নিয়ে সরকারি হাসপাতালে আসা শাহিদা আক্তারের স্বজন জানান, ডাক্তার না থাকায় রুগি ইমারজেন্সি ডিউটি ডাক্তারের রুমে কাতরাচ্ছে, ২০ মিনিট পরে এসে রোগি ভর্তি দিলেন ডা: শিপলু সরকার। স্থানীয় একজন রুগি সিমা জানান, গত ১ জুলাই সকালে তিনি সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য গেলে ডা. শিপলু সরকার তাকে একটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার পরামর্শ দেন। রোগি সরকারি হাসপাতালে করতে চাইলে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, এই টেস্ট সরকারি হাসপাতালে করা যাবে না—এটি তার নিজের পছন্দের বেসরকারি ল্যাব, ইনসাফ ল্যাব-এ করাতে হবে। এমন কি এই পরীক্ষা অন্য কোনো ল্যাবে করালেও ডা. শিপলু সেই রিপোর্ট গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন।এসময় রোগী প্রাথমিক কিছু ওষুধ লিখে দিতে বললেও ডা. শিপলু বলেন, “রিপোর্ট ছাড়া কোনো ওষুধ লেখা যাবে না।” এর আগে আরও কয়েকজন রোগীর অভিযোগ পাওয়া গেছে, তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরিবর্তে রোগীদের নির্দিষ্ট ল্যাবে টেস্ট করিয়ে আনতে চাপ দেন এবং সেই ল্যাব ছাড়া অন্য কোথাও করা রিপোর্ট তিনি গ্রহণ করেন না।যদিও সরকারী হাসপাতাল ল্যাবে রুগির বিভিন্ন পরিক্ষা করা হয়, কিন্তু কমিশন ব্যনিজ্য করার জন্যই রোগিকে অতিরিক্ত টেস্ট লেখেন এবং তা বেসরকারি ল্যাব গুলো তে করতে হয়, তাতেই কমিশন নেয় এই ডাক্তার। স্থানীয়রা বলেন, “সরকারি দায়িত্বে থেকে যদি চিকিৎসক ব্যক্তিস্বার্থে রোগীদের হয়রানি করেন, তাহলে গরিব মানুষ যাবে কোথায়? তারা দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।অভিযোগের বিষয়ে ডা: শিপলু সরকার বলেন, আমার রুগি আমি যেখানে চেম্বার করি সেই খানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে বলবো, তাছাড়া হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি হয় না, ইমারজেন্সি ডিউটি সময় বে সরকারী ল্যাবে চেম্বারের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ওনার সাথে দেখা করতে বলেন। ডা: শিপলু সরকারসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রুগি হয়রানির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা: সব্যসাচী নাথ বলেন, সরকারি হাসপাতালে যে সকল সুযোগ সুবিধা রুগি পাওয়ার কথা,সেইগুলো ঠিক দেওয়ার কথা, কোন রোগি প্রতারিত হলে তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি না হওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন গত সাপ্তাহে ৩ টি আল্ট্রা হয়েছে,২ জুলাই ডিউটি সময় মেডিকেল অফিসার ডা: শিপলু সরকার ল্যাবে চেম্বার ও রুগি দেখার বিষয়ে কর্মকতা বলেন, আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন কে বিষয়টি জানালে তিনি ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দেন।