নাটোরের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ করেই একের পর এক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন

নাটোরের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ করেই একের পর এক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। গত দুই দিনে শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের সবাই পাবনার ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠানের (ইপিজেড) শ্রমিক।
এদিকে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরকারি ওষুধ না থাকায় রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীরা।
রবিবার ( ১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে। আক্রান্ত শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছে ডেনিম ভিনটেজ (এ্যাবা), নাকানো ইন্টারন্যাশনাল বিডি এবং আরও কয়েকটি কারখানার কর্মীরা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ইপিজেডে খাবার ও পানি গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই শ্রমিকদের মধ্যে বমি, পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানার উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। প্রথমে কয়েকজন হালকা অসুস্থতা অনুভব করায় ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডায়রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত ১০৩  জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অনেকে বাড়ি ফিরে গেলেও গুরুতর অবস্থায় বর্তমানে অন্তত ৮০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অনেকেইর অবস্থা আশংঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এ্যাবা কারখানার শ্রমিক সিয়াম রেজা বলেন, “আমি বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কাজের ফাঁকে ইপিজেড এলাকার সরবরাহ করা পানীয় পানি (স্লালাই) খেয়েছিলাম। এরপর থেকেই পেট ব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়।” নাকানো ইন্টারন্যাশনালে কর্মরত অভিষেক কুমারও একই অভিজ্ঞতা জানান।
হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. খোরশেদ আলম রানা বলেন, “শ্রমিকদের খাবার বা পানিতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খাদ্যজনিত বিষক্রিয়ার কারণেই তাদের ডায়রিয়া, বমি ও পেট ব্যথা দেখা দিয়েছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে ছুটি বাতিল করে অতিরিক্ত নার্স ওয়ার্ডে কাজ করছে।
এবিষয়ে নাটোর সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মাদ মুক্তাদির আরেফীন বলেন, ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সজাগ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে।