পরে রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। বর্তমানে তিনি ওই মামলায় সাজাভোগ করছেন।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাইহী রাজিউন। গত সোমবার (১৪ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিএসএমএমইউ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. রেজাউর রহমান সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কাশিমপুর কারাগার থেকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএসএমইউ-তে পাঠানো হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুপুরে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে কারা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কর্তব্যরত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রফিকুল ইসলাম জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বুকে ব্যথাজনিত সমস্যার কারণে সাঈদীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনি যেহেতু বয়স্ক মানুষ, তার কিছু সমস্যা ছিল। তার বুকে ব্যথা, হার্টে সমস্যা, প্রেসার ও ডায়াবেটিসজনিত কিছু সমস্যা ছিল।

তাকে ইসিজিসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সযোগে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পাঠানো হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল ফাতে মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছেন যে, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হাসপাতালে আনার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। বর্তমানে তিনি ওই মামলায় সাজাভোগ করছেন।