নরসিংদীর মাধবদীতে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির জেরে নিজ ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের হাতেই খুন হয়েছেন মোঃ শুভ মিয়া (২০)। হত্যার ১৫ দিন পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে। হত্যায় জড়িত তিন বন্ধু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
নিহত শুভ মিয়া সদর উপজেলার মাধবদী থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ৬ মে সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি তিনি। পরিবারের খোঁজাখুঁজির পর ৭ মে সকালে খিদিরপুর টেকপাড়া এলাকার জানের মুখ ব্রিজসংলগ্ন একটি ডোবার পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে শুভর বড় ভাই সাহেদ মিয়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর-১৩, তারিখ: ০৯/০৫/২০২৫)।
পিবিআই তদন্ত শুরু করে ছায়া অনুসন্ধানের মাধ্যমে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে হত্যাকারীদের সনাক্ত করে সংস্থাটি। এরপর ২০ মে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে হাবিবুর রহমান (২৪) ও কবির হোসেন (২১), এবং ২১ মে চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার নায়েরগাঁও এলাকা থেকে আহম্মাদ নাঈম (২৪) কে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, নিহত শুভ ও অভিযুক্তরা ছিলেন বহুদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা নিয়মিত একসঙ্গে সময় কাটাতেন ও মাদক সেবনে জড়িত ছিলেন। ঘটনার দিন খিদিরপুর টেকপাড়ায় একত্রে মাদক গ্রহণের সময় হাবিব ও শুভর মধ্যে মাদক সংগ্রহ নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে হাবিব শুভর গলা চেপে ধরে মারধর শুরু করে। এতে কবির ও নাঈমও যোগ দেয়। পরে একটি পরিত্যক্ত গরু বাঁধার রশি দিয়ে গলায় প্যাঁচ দিয়ে দুই দিক থেকে টেনে শুভকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। মরদেহ ডোবায় ফেলে দেওয়া হয় এবং রশিটি ফেলে দেওয়া হয় খালের পানিতে।
পিবিআই জানায়, গ্রেফতার হাবিবের কাছ থেকে নিহত শুভর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত করছেন সংস্থাটির উপ-পরিদর্শক মোঃ আবু সালেক। এখনো পলাতক থাকা আরও একজন আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন নরসিংদী জেলার মাধবদী শেখেরচরের মোল্লাপাড়ার জাকির হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৪), মাধবদী কুড়েরপাড় এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কবির হোসেন (২১) ও নরসিংদী পলাশ উপজেলার কুমারটেকের জালাল মিয়ার ছেলে আহম্মাদ নাঈম (২৪)।
পিবিআই জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের জট খুলেছে তারা এবং বাকি অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
