নাটোর শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টে আমরা গুলির সামনে দাঁড়িয়েছি, ট্যাংকের সামনে থেকেছি। যারা বিদেশে ছিলেন, যারা থানায় নিরাপদে ছিলেন, তাদের সেই ত্যাগের ইতিহাস নেই, তাই দেশের মানুষের প্রতি তাদের দরদও থাকতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছরে যারা একটি বালুর ট্রাক পর্যন্ত সরাতে পারেনি, যারা নিজেদের নেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পারেনি, তাদের হাতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।”
পীর সাহেব বলেন, “এই দেশে মুসলমানদের আন্দোলনের ইতিহাস ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান পিরিয়ড, এমনকি স্বাধীনতা আন্দোলনেও স্পষ্টভাবে বিদ্যমান। এখন সময় এসেছে ইসলামী আন্দোলনকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার।”
তিনি পূর্ণ প্রতিনিধিত্বমূলক পিআর (Proportional Representation) নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান। বলেন, “এই দেশে একতরফা ভোটের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগকে শিখিয়েছি বিএনপি, আর বিএনপিকে শিখিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
তিনি দেশের চলমান দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পরও দেশে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। বাস স্ট্যান্ড, টেম্পু স্ট্যান্ডে এখনো চাঁদা আদায় চলছেই। দেশের জনগণ এই ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়।”
সমাবেশে তিনি ঘোষণা দেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শক্তভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং ইসলামভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচন করবে। চোর-দুর্নীতিবাজদের আর রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা যাবে না।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন–
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান,মুফতি নূরুল নাবী,
হাফেজুল আলম কাসেমী (উপজেলা প্রার্থী),
মাওলানা সিদ্দিকী (জেলা সভাপতি)।
সমাবেশ শেষে নাটোর জেলার বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন পীর সাহেব নিজেই।