আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও কক্সবাজারের টেকনাফে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। দোয়া মাহফিল ও কাঙ্গালি ভোজের মাধ্যমে দিনটি স্মরণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

১৫ আগস্ট বিকেলে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার আনাস বিন মালেক জামে মসজিদে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গত সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল বশরের নেতৃত্বে দোয়া মাহফিল ও এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এসময় টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাম জালাল, হ্নীলা ইউনিয়নের হোসেন মেম্বার ও ইউছুফ মনোসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, একই দিন সন্ধ্যায় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া এলাকায় ইউনিয়ন যুবলীগের উদ্যোগে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব।

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। তবে হঠাৎ করে একটি মসজিদে ব্যানার টাঙিয়ে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী পালনের চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‍্যাব ঘটনাস্থলে গেলে নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।

তবে রহস্যজনক কারণে প্রকাশ্যে এ আয়োজনের নেতৃত্বদানকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুবকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। পরিবর্তে দায় এড়াতে পুলিশ গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। যদিও ওসি তাদের নাম প্রকাশ করেননি, তবে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক সভাপতি সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর বড় পুত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোশেদ, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর ছোট পুত্র ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তারেক মাহবুব রনি এবং আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান।

এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চলমান থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-জনতা।

স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর ও টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি ওসির বাসায় নুরুল বশরের রাত্রীযাপন ও যাতায়াতের কথাও প্রচারিত হচ্ছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-জনতা এবং স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতারা।