ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার (১৩ জুলাই) বিকাল থেকে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এর আগে শনিবার (১২ জুলাই) রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর এলাকার আল বারাকা হাসপাতালের সামনে হামলার স্বীকার হন নোবিপ্রবির তিন শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৯তম ব্যাচের ছাত্র অনিমেষ দেবনাথ, সৌমেন বড়ুয়া এবং কাজী মো. সাউদুজ্জামান।
ভুক্তভোগী অনিমেষ দেবনাথ বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে বাঁধন প্লাজার একটি বাসে করে ফেরার পথে চৌমুহনী পৌঁছালে হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরার চেষ্টা করে এবং অন্যদেরও এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমাদের মোবাইল থেকে ছবি-ভিডিও মুছে ফেলা হয় এবং আমার পকেট থেকে ছয় হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবাদ করতে গেলে নোবিপ্রবির নাম শুনে স্থানীয়রা আরও বেপরোয়া আচরণ করে। তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে, “মামলা করলে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে।”’
ঘটনার পর অনিমেষ দেবনাথ বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (মামলা) দায়ের করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসের মধ্যেই স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়, যা একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। রবিবার বিকাল থেকে চৌমুহনী চৌরাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এতে আশপাশের এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার ওপর হামলা। হামলাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
এসময় অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বানী ইয়ামিন ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সাময়িকভাবে অবরোধ প্রত্যাহার করে বলেন, এর মধ্যে যদি দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা না হয় তাহলে আগামীকাল নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’