পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) নির্মাণাধীন হলে শ্রমিকদের পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে সময় শ্রমিকদের দলনেতাকে বঁটি দিয়ে আঘাত করতে গেলে সেখানে বাধা দেয়ায় বঁটির কোপে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ছাত্রী হলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত তিনজন হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার হাকরইল গ্রামের মো. সাইদুর রহমানের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৭), মো. তহুরুল ইসলামের ছেলে মো. মাসুম (২২) এবং মো. দিলবর আলীর ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন সুমন (২৮)। তারা সবাই নির্মাণাধীন হলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন তাদের দলনেতা জালালউদ্দিনের কাছে পারিশ্রমিকের পাওনা টাকা চাইতে যান। দলনেতা ঐ মুহুর্তে তার কাছে  টাকা না থাকায় এক দিন পর টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে দেলোয়ার রান্নাঘর থেকে আগেই এনে তোষকের নিচে লুকিয়ে রাখা বঁটি দিয়ে দলনেতাকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। এ সময় জালালউদ্দিনকে বাঁচাতে গিয়ে আরেক শ্রমিক একরামুলের হাতে বঁটির কোপ লাগে। এতে একরামুলের একটি আঙুল জখম হয়। চিৎকার শুনে আশপাশের শ্রমিকরা ছুটে আসার আগেই দেলোয়ার বঁটি ফেলে পালিয়ে যান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাপ্রধান মো. মুকিত মিয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয় এবং তার কাছ থেকে বঁটি উদ্ধার করা হয়। আটকের পরে জিজ্ঞাসাবাদের সময় দেলোয়ার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করে জানান, তিনি মাদকাসক্ত অবস্থায় ছিলেন। তিনি আরও জানান, গত ১৭ বছর ধরে গাঁজা সেবন করছেন এবং তার সহযোগী মাসুম ও সুমনও গাঁজা সেবনে অভ্যস্ত। দেলোয়ার আগে একটি মাদক মামলায় কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা অভিযান চালিয়ে দেলোয়ারের দুই সহযোগী মাসুম ও সুমনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে গাঁজা ও গাঁজা সেবনের সরঞ্জামাদিস্বরূপ চারটি সিগারেট উদ্ধার করা হয়। এরপর আটক ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুমকী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মাহমুদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালত অভিযুক্তদের প্রত্যেককে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা করে অর্থদণ্ড দেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অব্যাহত অভিযান চলমান থাকবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রদের কারো বিরুদ্ধে যদি মাদকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া যায় তবে কঠিন পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত প্রশাসন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে কোনো ধরনের মারামারি ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের সাথে যারাই যুক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেই অ্যাকশনে যাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।