পরিবারের অত্যাচারে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘরে’ স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতে না পেরে প্রতিবন্ধী বাদশা শেখ এখন আশ্রয় নিয়েছে শ্বশুরবাড়ি। ঘটনাটি ঘটে বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের হুলাইল গ্রামে। তিনি হুলাইল গ্রামের আব্দুল বারেক শেখের ছেলে।

সরেজমিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বাদশা শেখের নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের নির্মিত ঘরটি তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাদশা অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্যাতনে স্ত্রী ও তিনটি অবুঝ শিশুকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুরবাড়ি বহরপুর ইউনিয়নের নতুনচর বালিয়াপাড়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমার কষ্টার্জিত ৪০ হাজার টাকা নিয়ে মাত্র দুই শতাংশ জমি লিখে দিয়েছেন তার বাবা আব্দুল বারেক। সেই জমিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দিয়েছেন। এজন্যও আমার ভাই মিন্টু শেখ ঘর বাবদ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ঢাকায় কাজ করে টাকা দিলে তা তিনি আত্মসাৎ করেন। এরপর বাড়িতে এসে বিয়ে করেন পাশের ইউনিয়নে। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী অসহায়দের উপহার স্বরূপ ঘর দিয়েছেন। অথচ সেই ঘরে থাকতে পারছেন না প্রতিবন্ধী বাদশা শেখ ও তার পরিবার। প্রতিবন্ধী বাদশার স্ত্রী সেলিনা খাতুন আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা নিরীহ প্রকৃতির মানুষ। আমার প্রতিবন্ধী স্বামী জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন হাট-বাজারে পান সিগারেট বিক্রি করেন। তিনি বাড়িতে না থাকার সুবাদে দেবর রিপন বিভিন্নভাবে নির্যাতনের চেষ্টা চালান। একথা বাড়ির মুরব্বিদের কাছে বললে রিপনকে শাসন না করে উল্টো আমাকে মারধর করাসহ নানাবিধ নির্যাতন করে। বাড়ির টিউবওয়েলের পানি নিতে দেয় না।

টয়লেট ব্যবহারে বাধা দেয়। এরপরও যন্ত্রণা সহ্য করে ৮ বছরের মেয়ে লিপি আক্তার, ৬ বছরের ছেলে সেলিম শেখ ও দেড় বছরের ছেলে আরাফাতকে নিয়ে স্বামীর ভিটায় পড়েছিলাম। সম্প্রতি শ্বশুর-শাশুড়ি, জা রেহানা ও দেবর রিপনের নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়ি বহরপুর ইউনিয়নের নতুনচর বালিরচর গ্রামে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এ বিষয়ে কথা বলতে বাদশার হুলাইলের বাড়িতে গেলে মিন্টুর ছোট দুইটি বাচ্চা ছাড়া আব্দুল বারেক শেখ, মিন্টু শেখ ও রিপন শেখকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মিন্টুর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, ‘অনেক দিন ধরে নানা কথা শুনছি। তবে ঘরটি তালা মেরে কিছুদিন থরে শ্বশুরবাড়ি আশ্রয় নিয়েছেন বাদশা ও তার স্ত্রী-সন্তান। ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহম্মদ আলী মাস্টার বলেন, ‘আমি সরেজমিন গিয়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ আমাকে অবগত করেনি। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।