পাবনার সুজানগর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় উপজেলার সাতবাড়ীয়া, মানিকহাট, নাজিরগঞ্জ ও সাগরকান্দি ইউনিয়নের নদীপাড়ের শত শত বিঘা ফসলি জমি ইতোমধ্যেই পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে, যা ভাঙনের অন্যতম কারণ। এর ফলে নদীতীরবর্তী বহু গ্রাম, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের তারাবাড়ীয়া এলাকায় নদীভাঙন রোধ ও নদীতীর সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পাশাপাশি সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ, সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী। তারা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে নদী রক্ষায় সোচ্চার হন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ময়েন উদ্দিন মোল্লা, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী টুকু, সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শরিফুল ইসলাম, সিসিডিবি পাবনা জোনাল এরিয়া ম্যানেজার রিচার্ড দোবে, আবুল কালাম, আব্দুল আলীম, ওয়ালিদ হাসান, শিক্ষক খাজা মঈনুদ্দিন, মনোয়ার হোসেন, নুরুজ্জামান নুরু ও অন্যান্যরা। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদী যেমন এই জনপদকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নিয়েছে বহু কিছু। সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের হরিরামপুর, ফকিতপুর, নিশ্চিন্তপুরসহ একাধিক গ্রাম, সাতবাড়ীয়া বাজার, শত শত বিঘা জমি, অসংখ্য স্থাপনা ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় দশটি গ্রামের সহস্রাধিক বসতবাড়ি, আড়াইশো বছরের পুরোনো প্রায় দুই শতাধিক দোকান, সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ, শতবর্ষী সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ভূমি অফিস, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছয়টি মসজিদ, দুইটি মাদ্রাসা, পাঁচটি হিন্দু মন্দির ও চারটি ব্যাংক। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এখনই যদি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে এই এলাকাগুলোর বহু স্থাপনা এবং জনপদ চিরতরে হারিয়ে যাবে। অবিলম্বে ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।