চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোবরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করায় এর প্রতিবাদ জানিয়ে ও পূর্বের নাম পুর্নবহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সদর উপজেলার গোবরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে গোবরাতলা গ্রামবাসী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ০৩ এপ্রিল গোবরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামকরণ করা হয়৷ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
শুধু এই বিদ্যালয় নয়, আশেপাশের কয়েকটি উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ইউনিয়ন পরিষদ গোবরাতলা নামে রয়েছে। এমনকি গোবরাতলা একটি গ্রামেরও নাম। তাই পরিবর্তন করতে হলে আগে সেসব প্রতিষ্ঠান ও দপ্তরের নাম পরিবর্তন করতে হবে।বক্তারা আরও বলেন, গোবরাতলা নামটি এই অঞ্চলে মানুষের মুখে মুখে ও অন্তরে মিশে আছে। অথচ শ্রুতিমধুর না এমন মিথ্যা অভিযোগে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু গোবরাতলা গ্রাম, গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদ, গোবরাতলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গোবরাতলা ভূমি অফিস, গোবরাতলা বাজার, গোবরাতলা মহিলা কলেজ, গোবরাতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন নাম পরিবর্তন করা হয়নি৷ যারা এই বিদ্যালয়য়ের নামটি পরিবর্তন করার সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
নতুন নাম বাতিল করে পূর্বের নাম বহাল করতে ৭ কর্মদিবসের সময় বেঁধে দেন বক্তারা। দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন তারা। এবিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. সুজা উদ্দিন বলেন, গোবরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নাম পরিবর্তন করে গত ০৩ এপ্রিল বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামকরন করা হয়েছে। সে সময় আমি এখানে কর্মরত ছিলাম না। শুধু আমাদের বিদ্যালয়ই নয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। যার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৪৮টি এবং সদর উপজেলাতে ৪৭টি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অভিভাবক, স্থানীয় বাসিন্দা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির লোকজনের সাথে আলোচনা করে পূর্বের নাম বহাল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জেহের আলী বলেন, বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কোন আপত্তি থাকলে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে নাম পুর্নবহালের বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তা সমাধান করা হবে। ইতোমধ্যে এমন কয়েকটি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের আবেদন পাওয়া গেছে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউল ইসলাম আজিজী, গোবরাতলা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা, গোবরাতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুল ইসলাম মিলন, সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমান, ইউপি সদস্য মতিউর রহমান মতু, স্থানীয় বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম পলাশ, মো. আক্কাশ আলী, হিমেল চৌধুরী, মো, সজল আলী, মো. শ্যামল ইসলাম, মো. মানিক আলী, মো. হজরত আলী, শ্রী বাসুদেবসহ অভিভাবক ও স্থানীয়রা। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন গোবরাতলা মহিলা কলেজ ও গোবরাতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।