সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল বিদ্যমান ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এরমধ্যে৷ ১২তম গ্রেডপ্রাপ্ত ১হাজার ১শত ৫৪ জনের বেতন-ভাতা বাড়বে।
এ ছাড়া ১১তম গ্রেডপ্রাপ্ত ১৩ হাজার ৮শত ৫৪ জনের বেতন-ভাতাও বাড়বে। তবে উচ্চতর গ্রেডপ্রাপ্ত ১৬ হাজার ৩৮৮ জনের কোনো বেতন-ভাতা বাড়বে না।
২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
ওই প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত ১ হাজার ১শত ৫৪ জন ১২তম গ্রেড পাচ্ছেন। তাদের দশম গ্রেডে উন্নীত করা হলে তারা মূল বেতন বেশি পাবেন ৪ হাজার ৭০০ টাকা। এ ছাড়া ৪০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া বাড়বে। যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৩৫ টাকা।এ ছাড়া বিশেষ সুবিধা ভাতা বাড়বে ৭০৫ টাকা, উৎসব ভাতা বাড়বে ৪ হাজার ৭০০ টাকা, নববর্ষ ভাতা বাড়বে ৯৪০ টাকা।
অন্যদিকে ১১তম গ্রেডে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরতদের মধ্যে ১৩ হাজার ৮শত ৫৪ জনের মূল বেতন বাড়বে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। তাদরে ৪০ শতাংশ হারে ১০৯৫ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ সুবিধা বাড়বে ৫২৫ টাকা, উৎসব ভাতা বাড়বে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, নববর্ষ ভাতা বাড়বে ৭০০ টাকা।বর্তমানে দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ হাজার ৩৮৮ জন কর্মরত প্রধান শিক্ষক উচ্চতর গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। বিষয়টি এখন প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
যুগান্তকারী এই সিদ্ধান্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে । গৃহীত উদ্যোগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তাদের সামাজিক মর্যাদা সুসংহত করবে। ফলে তারা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও সৃজনশীল ও উদ্দীপ্ত ভূমিকা পালন করবে। এতে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আরও উন্নত ও গতিশীল শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার মাধ্যমে তাদের প্রতি তার দায়বদ্ধতা ও সম্মান প্রদর্শন করছে সরকার। এ পদক্ষেপ প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা অন্যান্য শিক্ষকমণ্ডলী, অভিভাবক ও সর্বস্তরের অংশীজনের সহযোগীতায় প্রাথমিক শিক্ষার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করবেন, এটি সরকার প্রত্যাশা করতেই পারে।
বেতন নির্ধারণে সিনিয়র প্রধান শিক্ষকেরা ০৯/০৩/২০১৪ ইং তারিখ থেকে এগারো ও বারোতম গ্রেড থেকে দশম গ্রেড পাবেন। কিন্তু মামলার রায় অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের যারা ০৯/০৩/২০১৪ ইং তারিখ ১০ম, ৯ম ও ৮ম গ্রেডে আছেন তারা কি ঐ তারিখ থেকে দশম গ্রেডের কোন আর্থিক সুবিধা পাবেন না ? যদি না হয় তবে সেই ক্ষেত্রে সিনিয়র ও জুনিয়র প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয় হীনতা থেকেই যাবে।
সেই ক্ষেত্রে আমার প্রস্তাবনা থাকবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ জারিকৃত তারিখ:১৫/১১/২০১৭,স্মারকনং০৭.০০.০০০০.১৬১.৩৮.০০.০০১.১৭-২৩১ পত্র মোতাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ০৯/০৩/২০১৪ তারিখে বেতনস্কেল উন্নীত হওয়ার পূর্বে যিনি যে সংখ্যক টাইমস্কেল পেয়েছেন বা প্রাপ্য হয়েছেন, উন্নীত বেতনস্কেলের উপরে সেই সংখ্যক টাইমস্কেল গণনা করে বেতনস্কেল উন্নীত করার অব্যবহিত পূর্বে তার সর্বশেষ আহরিত বা প্রাপ্য মূল বেতনের ভিত্তিতে বেতনস্কেল উন্নীতকরণের তারিখে বেতন নির্ধারণ করা হলে সিনিয়র প্রধান শিক্ষক ও জুনিয়র প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয় সাধিত হবে সেই সাথে কম বেশি আর্থিক সুবিধাও পাবেন। ইতোমধ্যে যারা অবসরে গেছেন তাদের দীর্ঘদিনের অপ্রাপ্তির জায়গায় কিছুটা হলেও প্রাপ্তি যোগ হবে।আশাকরি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুবিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন।