বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর এলাকার বাসিন্দা ও আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী তামান্না আক্তার (০৯) ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে রেপিড একশন ব্যাটালিয়ন (RAB)।

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর এলাকার বাসিন্দা ও আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী তামান্না আক্তার (০৯) ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে রেপিড একশন ব্যাটালিয়ন (RAB)।

গ্রেফতারকৃত এ আসামিরা হলেন নিহত তামান্না আক্তার এর খালু সুলতান হাওলাদার (৫০) এবং খালাতো ভাই মোহাম্মদ তাওহীদ (৩০)। আসামিরা সম্পর্কে পিতা ও পুত্র। এদের বাড়ি উজিরপুর উপজেলা সদরের মাদারসী হাসপাতাল রোড এলাকায়।

১৪ই মে মঙ্গলবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রিপিড একশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব আট।

এ সময় র‍্যাব জানায়: বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর এলাকার বাসিন্দা ও আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল নিহত তামান্না। আসামিরা নিহতের আত্মীয়-স্বজন। এরই সুবাদে ২রা মে উজিরপুর পৌরসভার হাসপাতাল রোড এলাকায় খালার বাড়িতে বেড়াতে আসে তামান্না।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বরাত দিয়ে RAB জানায় বেড়াতে যাওয়ার পরের দিন অর্থাৎ ৩রা মে, সকাল ১১ টার দিকে বসত ঘরে একা পেয়ে তাওহীদ ভিকটিম শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে সুলতান হাওলাদার সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারে। আশেপাশের লোকজন জানার আগেই দুপুর পৌনে বারোটার দিকে তারা শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে বসত ঘরের সিঁড়ি কোটার টিনের নিচের রুয়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।

RAB জানায়, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে সুকৌশলে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শিশুটি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার শুরু করে। এবং ভিকটিমের পরিবারকেও ফোন করে একই কাহিনী জানায়। তবে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্য এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় ঘটনাটি। ভিকটিমের পরিবার, স্কুলের সহপাঠী, শিক্ষক, অভিভাবক , আত্মীয়-স্বজন, এবং এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন ও বিভিন্ন প্রতিবাদ সভা করে।

অবশেষে ৮ ই মে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে পরবর্তীতে শ্বাসরোধ করে হত্যা এবং হত্যার সহায়তার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করেন বরিশাল জেলার উজিরপুর মডেল থানায়। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয় RAB ৮। এবং বরিশাল সদর কোম্পানি কর্তৃক শুরু হয় ছায়া তদন্ত।

এর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এবং সর্বশেষ র‍্যাব আট এবং র‍্যাব ১০ এর সিপিসি তিন ক্যাম্পের সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানাধীন চুনাঘাট বাজার এলাকা থেকে আসার সময় বাবা ও ছেলেকে গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তারকৃত সুলতান ও তার ছেলে মোহাম্মদ তাওহীদকে পরবর্তীতে উজিরপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে RAB. ৮ এর সদর দপ্তর।