পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবিব পলাশ বলেছেন, "মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান আমরা সকলেই এ দেশের নাগরিক। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করলে তাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ধর্মীয় কারনে উপাসনালয়ে হামলা করা যাবেনা। কোনোভাবেই কোন প্রকার বিচ্ছেদ হতে দেয়া যাবে না। আপনারা জানেন আমাদের ব্যর্থতা লেখার জন্য শকুনের ন্যায় তাকিয়ে আছে কারা। আমাদেরকে আর ব্যর্থ হওয়া যাবে না। ত্যাগ ছাড়া কোন অর্জনিই সম্ভব হয়নি। জুলাই বিপ্লবের বহুদিন পর দেশ গড়ার সুযোগ এসেছে । ছাত্র-জনতার বিপ্লবে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ব্যাপারে আমরা কঠোর থাকবো। আমরা আবার নতুন করে শুরু করতে চাই। যে ধরনের পুলিশ আপনারা প্রত্যাশা করেন সে ধরনের পুলিশের জন্য আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান। ২ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে ছাগলনাইয়া থানা প্রাঙ্গণে ফেনী জেলা পুলিশের আয়োজনে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা হলেন। "আমরা বহুদিন পর দেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমাদের দায় এড়াতে পারিনা। তবে আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪০ জন পুলিশ সদস্যও প্রাণ দিয়েছেন। আপনারা অনুধাবন করতে পারছেন না, আমরা কি ধরনের চ্যালেঞ্জে আছি। দয়া করে চ্যালেঞ্জ বুঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আপনারা জানেন, কারা কোন দিকে শুকুনের মতো তাকিয়ে আছে আমাদের ব্যর্থতা দেখার জন্য। তাকিয়ে আছে কখন আমরা মরব, কখন আমরা 'অচল ও ব্যর্থ হবো। আমাদের যত ব্যর্থতা ততই তারা উল্লোসিত।পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। ছাগলনাইয়া থানার ওসি মোঃ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির 'আহবায়ক আলহাজ্ব নূর আহাম্মদ মজুমদার, উপজেলা জামায়াতের আমির আজাদ হোসাইন, মাওলানা আবদুল মতিন, ছাত্র সমন্বয়ক মিরাজ ও মোঃ ফরহাদ হোসেন।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, জুলাই আগষ্ট বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন তাদের খোঁজ খবর নিয়ে পাশে থেকে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরী। এটি ক্যাটাগরিতে কাজ চলছে। শহীদদের বিষয়টা সেনসেটিভ। এই পরিবার গুলোর বিষয়ে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিবে। পাশাপাশি যারা আহত আছেন তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া কিভাবে আগাবে সে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে। সরকারের কাছে মানুষ টাকা পয়সা চায়না। ভালো একটা পরিবেশ চায় । যারা আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেন তাদের সহযোগিতা করা প্রতিটা মানুষের দায়িত্ব। আবার আগের জায়গায় নিয়ে আসা হলো আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। পুলিশসহ সমস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জন্য জেলায় চেয়ে 'অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করছে। আমার আশা বেশিদিন সময় লাগবেনা পুলিশী কার্যক্রম পুরোপুরি চালু করতে।পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, উন্নয়নের জন্য, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় থাকা দরকার। সারা দেশে স্বৈরাচারের দোসরদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। মামলার আসামিদের ছাড় দেয়া হবে না। আমি যখন এ জেলায় এসেছি তখন পুলিশের কোনো কার্যক্রম ছিলনা। আন্দোলনের সময় কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের থানায় আক্রমণ করে লুটপাট চালায়। সে সময় ছাত্র সদস্যরা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকার সুশীল সমাজ ছাগলনাইয়া থানাকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করেছেন এজন্য তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। ছাগলনাইয়া থানাকে পুনর্গঠনে এলাকাবাসীর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। এ কারণে আমরা দ্রুত থানার কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। সুধী সমাবেশে পুলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, মুক্তিযোদ্দা, রাজনৈতিক সাংবাদিক এ মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।