রংপুর জেলার মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, ও পীরগঞ্জ এলাকার আখ চাষীরা এখন আখ মাড়াই মেশিন দিয়ে আখের গুড় উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছে গতকাল রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার ছড়ান আটপুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে আখচাষী নারী, পুরুষ সবাই ক্ষেত থেকে আখ সংগ্রহ করে গুড় মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। আখচাষী ফজলুল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিদিন তিনি গড়ে ৬ থেকে ৭ মন আখের গুড় উৎপাদন করেন। ভেজাল ও কেমিক্যালমুক্ত আখের রস থেকে এসব গুড় সরাসরি উৎপাদিত হয় বলে বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমান এগুলো স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হচ্ছে। আখ থেকে সরাসরি রস সংগ্রহ করে মাড়াই মেশিনে পিষিয়ে রস বের করা হয়। সেই রস বড় বড় কড়াইয়ে করে চুল্লিতে তাপ দিয়ে জমাট বাধিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। গুড় গুলো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও মজাদার হওয়ায় পিঠে পায়েস তৈরিতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি ভাঁপা পিঠা, তেল পিঠা, ক্ষীর, পায়েস, মুড়ি-মুড়কি, মুড়ির খাজা, দুধ ভাত খেতে এসব গুড় ব্যবহার করা হয়।প্রসঙ্গত রংপুর অঞ্চলের তিনটি চিনিকল (শ্যামপুর, সেতাবগঞ্জ এবং মহিমাগঞ্জ) বিগত কয়েক বছর ধরে বন্ধ থাকায় এই অঞ্চলে আখের উৎপাদন তুলনামূলক ভাবে কমে গেছে। এছাড়া চিনিকল গুলোতে আখ সরবরাহ করতে কৃষকদের নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। সেজন্য আখ চাষীরা নিজেরা আখ চাষ করে স্থানীয়ভাবে গুড় মাড়াই করে বাজারে বিক্রি করতেই বেশী স্বাচ্ছন্দবোধ করেন । চিনিকল গুলো চালু থাকা অবস্থায় স্থানীয়ভাবে আখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদনে সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল। যেহেতু এখন চিনি কল গুলো বন্ধ রয়েছে সে সুযোগে আখ চাষিরা নির্বিঘ্নে আঁখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করছে এবং বাজারে বিক্রি করে ভালো লাভ করছে। স্থানীয কৃষকদের দাবি তাদের আঁখ মাড়াই শিল্পকে শিল্পের মর্যাদা দিয়ে এটিকে টিকিয়ে রাখা। তাছাড়া সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, ঋণ ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিলে তারা এই পেশায় আরো অধিক সংখ্যক লোক কাজ করতে পারবেন বলে স্থানীয় চাষীরা জানান। এতে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান হবে এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে বলে স্থানীয়দের মতামত।