কৃষি জমিতে সেচ ও জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার বৌলতলী ও বেজগাঁও ইউনিয়নে খাল পুনঃখনন ও নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ফলে চাষাবাদে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শুরপাড়া, বৌলতলী, জাঙ্গালিয়া ও বানিয়াগাঁও এলাকার প্রায় ১৫শত একর জমি জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ঢাকা (নির্মাণ) রিজিয়নের আওতায় মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলায় শুরপাড়া বৌলতলী জাঙ্গালিয়া শাখা খাল পুনঃখনন কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এতে ৪ দশমিক ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল পুনঃখননের মাধ্যমে কৃষিজমি থেকে জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশনের সুযোগ তৈরি হবে। যার প্রকল্প ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৭ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা।
ফলে কৃষকরা বছরে দুবার ফসল উৎপাদন করতে পারবেন। দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কারণে বানিয়াগাঁওসহ আশপাশের এলাকায় আলু চাষ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। খাল খনন শেষ হলে আগামী মৌসুমেই কৃষকরা আলু এবং বোরো ধানের আবাদ শুরু করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল আউয়াল বলেন, পানি জমে থাকার কারণে কয়েক বছর ধরে জমিতে ঠিকমতো ফসল ফলাতে পারি নাই। এখন যদি খাল খনন শেষ হয়, তাহলে আবার আলুর চাষ করবো। আগে যেই জমিতে আমরা এক ফসল ফলাতে পারতাম না এখন সেখানে দুই ফসল ফলাতে পারব।
কৃষক রহমান শেখ বলেন, এখন খাল শুকনো থাকায় দূর থেকে সেচপাম্পের সাহায্যে জমিতে পানি দিতে হয়। এতে খরচ যেমন বেশি হয়, আবার সময় মতো পানিও পাওয়া যায় না। এখন এই মরা খননের ফলে দুইটি ইউনিয়নের মানুষ ফসল ফলানোসহ সব ধরনের কাজেই করতে পারবে। এছাড়া এতে গ্রীষ্মকালে জমিতে যেমন পানির অভাব হতো, ঠিক বিপরীতে বর্ষাকালে প্লাবিত হয়ে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। এখন খাল খননের ফলে প্রাণ ফিরেছে এলেকার কৃষি খেতে।
উপজেলা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন কর্মকর্তা আব্দুল মোমেন বলেন, খনন কাজের মাধ্যমে পানি দ্রুত নিষ্কাশন হবে। যার ফলে কৃষক আগাম আলু উৎপাদন করতে পাড়বে এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে, আর পুরো এলাকার অর্থনীতিতেও আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন। এই খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুরো অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নেছার উদ্দিন বলেন, আমরা শুরপারা থেকে বলতলী পর্যন্ত প্রায় ৪.২ কিমি খাল খনন প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছি। কাজটি সম্পন্ন হয়ে গেলে অত্র এলাকার প্রায় ১৫শত একর জমি কৃষি চাষের আওতায় আসবে। যা দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উপযোগী ছিল না। আমরা আশা করছি কাজটির সম্পন্ন হলে এই এলাকার দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সমাধান হবে। এতে এই এলাকার উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি খাদ্য নিরাপত্তা মজবুত হবে।