“মা আমাকে যেতে দাও। আমি মারা গেলে তোমার ছেলে শহীদ হয়েছে জেনে গর্বে তোমার বুক ভরে যাবে।”— এমন কথাই বলেছিলেন বাগেরহাটের গর্বিত সন্তান শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়াম। দেশের চলমান জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া এই সাহসী ছাত্রের কবর জিয়ারত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাগেরহাট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
বুধবার (০৯ জুলাই) দুপুরে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাগেরহাট সদর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বুলবুল কবিরের পুত্র শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের কবর জিয়ারত করেন। পরে শহীদ সিয়ামের পরিবারের সদস্যদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন তারা।
জেলা জামায়াতের প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন মজলিশে শূরা ও কর্ম পরিষদ সদস্য মনজুরুল হক রাহাদ, সদর উপজেলা আমির মাওলানা ফেরদাউস আলী, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা লিয়াকাত আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা
শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎকালে জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, “শহীদেরা জাতির প্রেরণার উৎস। তাদের আত্মত্যাগ এই জাতি কখনোই ভুলবে না। শহীদের রক্তের উপর দিয়েই এদেশ নতুন করে আবার স্বাধীন হয়েছে।”
শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যখন দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, শহীদ সিয়াম তখন ঢাকার সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় তার পরিবারের সাথে অবস্থান করছিল। দশম শ্রেণির এই ছাত্র প্রতিদিনই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিত।
গত ৫ আগস্ট ২০২৪, গণভবন অভিমুখে ছাত্র-জনতার যাত্রাকালে সিয়াম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদের সাথে যুক্ত হয়। মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করলে সিয়ামের মাথায় গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুইদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৭ আগস্ট তিনি শাহাদাত বরণ করেন।
পরবর্তীতে তার মৃতদেহ নিজ এলাকা বাগেরহাটের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে এনে দাফন করা হয়। তার আত্মত্যাগ আজও ছাত্র-জনতা ও প্রতিবাদী জনতার মনে অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।