ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (টিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ ইউনিয়নে এসব প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান নয়। কোথাও কাজ শুরু হলেও তা অত্যন্ত নিম্নমানের বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মির্জাপুর ইউনিয়নের চরগোলক নগর গ্রামের ব্রীজের পাশে কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে পরমন্দপুর অভিমুখে কাজের ৬,৭১০০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও, রাস্তায় ঢুকতে কোন কাজ চোখে পড়েনি।
স্থানীয় জানায় কয়েকদিন আগে, কাবিটা প্রকল্পের এই কাজে ভেকু এনে দুইদিন মাটি কাটিয়ে, মৌরি ভাঙা নামক স্থানে রাস্তা বাধা হয়, যা ঘণ্টায় ১৮০০ টাকা ঠিক করে। দুই দিন কাজ করার পর সেই রাস্তা আবারো খারাপ হয়, আর বাকি জায়গাগুলো আর কোন কাজ হয়নি।
স্থানীয় মেম্বার আলম রায়হান উদ্দিন বলেন, কাজ অফিস থেকে করাচ্ছে, অফিস দেখার পরে লাগলে আবার কাজ করবে।
অথচ ওই রাস্তায় অনেক জায়গা খারাপ রয়েছে এখনো।
এছাড়া অনেক স্থানে টিআর, কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের অধীনে কোনো কাজই শুরু হয়নি। আবার যেখানে সামান্য কাজ চোখে পড়ছে, সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী।
যুগিপাড়ায় নিম্নমানের ইট খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল,
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজের তদারকি না করায় ঠিকাদাররা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো কাজ করছেন। ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, অনেক প্রকল্পের বরাদ্দ লোপাট করা হয়েছে। কাগজে-কলমে কাজ দেখানো হলেও বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
ফুলহরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার ও আলমারি কেনায় এ দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে।
অভিযোগ এসেছে তিন নম্বর দিগনগর ইউনিয়ন, সিসি ক্যামেরা বসানো সহ অন্যান্য প্রকল্পের।
আবার কিছু প্রকল্পে দায়সারাভাবে কাজ করা হয়েছে, যা অল্প দিনেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে,
আব্দুল্লাহ আল মাসুম খান জানান, সবগুলো প্রকল্পের কাজ আমরা এক এক করে দেখছি, দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, দ্রুত এসব প্রকল্পের কাজের সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে না এবং জনগণের কষ্টের টাকা লুটপাট হতে থাকবে।
উল্লেখ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার টিআর, কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে থাকে। তবে শৈলকুপার চিত্র হতাশাজনক। স্থানীয়রা অবিলম্বে এর প্রতিকার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।