মোঃ মামুন ,অতি সাদাসিধা একজন শ্রমজীবী মানুষ।পেশায় একজন টমটম গাড়ি চালক।এই ঘোড়া জোড়া ও গাড়িই তার জীবিকা,তার পাথেয়,তার সম্পদ। দিনের অধিকাংশ সময় কাটে ঘোড়া ও গাড়ির সান্নিধ্যে।বাড়ি তার কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম মমিনবাগের মজিবর ঘাটে।


বেঁচে থাকার জন্য, পরিবারের একটু সুখ-শান্তির জন্য গত ত্রিশ বছর ধরে শ্রম ও ঘাম দিয়ে চালাচ্ছেন জীবন সংগ্রাম।বয়স মাত্র ৫৫ কিন্তু দাঁড়ি চুলে পাক ধরায় যে কারোরই মনে হবে বয়স তার ৭০-৭২ । বৈবাহিক জীবনে দুই সন্তানের জনক।প্রথম সন্তান মেয়ে লামিয়া স্থানীয় এক মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে আর ছোট সন্তান লিমন পড়ে হেফজ।

দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবৎ তিনি টমটম গাড়ি চালান। আগে সংসার ভালোই চলতো।এখন হিমশিম খাচ্ছেন।ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে, লেখাপড়ার খরচ বাড়ছে।বর্তমানে দৈনিক গড় ইনকাম দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু গো খাদ্যের দাম বাড়ায় দুটি ঘোড়ার খাবার বাবদ প্রতিদিন খরচ হয় ১৪০০-১৫০০টাকা।ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ দিয়ে বাকি টাকায় সংসার চালানো ভীষণ কঠিন । তবে শুক্র ও শনিবার বিয়েশাদী কিংবা কলেজ/ইউনিভার্সিটির শোভাযাত্রার ভাড়া পেলে দূরত্ব ভেদে আয় হয় চার হাজার টাকা থেকে শুরু করে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত। যেই সপ্তাহে শুক্রবার বা শনিবার রিজার্ভ ভাড়া থাকে না,সেই শুক্র ও শনিবার চলে আসেন ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে।দুইশ' থেকে তিনশ' টাকায় যাত্রীদের বিনোদনের জন্য চক্কর দেন সংসদ ভবনের দক্ষিণ পাশ থেকে খামার বাড়ি হয়ে আড়ং এর সামনে ঘুরে ফের সংসদ ভবনের সামনে।এতে দৈনিক আয় হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা।তবুও হাঁপিয়ে উঠেছেন এই পেশায়।

দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে মামুন বললেন, মেয়েকে একটা ভালো পাত্রের কাছে বিয়ে দিয়ে এবং ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করতে পারলেই ইতি টানবেন এই পেশা। ততদিন পর্যন্ত কষ্ট হলেও চালাতে হবে এই ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি বা টমটম।