নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের মসলেন্দপুর গ্রামে বিচার সালিশের নামে দুই যুবককে চুরির দায়ে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক ও তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। 

 গত শনিবার বিকেলে মসলেন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুই যুবককে নির্যাতন করা হয়। চুরির প্রমাণ পেয়েও থানা পুলিশে না দিয়ে নিজেরাই পিটিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি আইন অমান্য করার অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নির্যাতিত যুবক বারদী ইউনিয়নের মসলন্দপুর গ্রামের  নবী হোসেনের ছেলে আল আমিন ও একই গ্রামের জামান মিয়ার ছেলে পারভেজ।  

জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের মছলন্দপুর এলাকার এভারগ্রীণ কিন্ডারগার্টেন নামের একটি স্কুল থেকে গত সোমবার রাতে ৯টি ফ্যান ও বৈদ্যুতিক মোটর চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে পাশ্ববর্তী আড়াইহাজার উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় গত শনিবার দুপুরে ফ্যান ও মোটর বিক্রি করতে গেলে জনতার হাতে ধরা পড়ে আল আমিন ও পারভেজ নামের দুই যুবক। এসময় তাদের ধরে গণধোলাই দেয় স্থানীয়রা। পরে তাদের শনিবার বিকেলে মসলন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি বিচার সালিসের আয়োজন করা হয়। সেই শালিসে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য ওমর ফারুকসহ শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিচার শালিসে চুরির দায়ে দুই যুবককে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়। বিচার শালিসে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক ও মসলন্দপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ ওরফে নুরা পাগলা নিজেই প্লাস্টিকের পানির পাইপ দিয়ে উপস্থিত লোকজনের সামনে তাদের প্রায় অর্ধ শতাধিক আঘাত করে। এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য গলায় পা দিয়ে চেপে ধরেন।

এলাকাবাসীর দাবি, ওই এলাকায় তিন যুবক আল আমিন, শান্ত ও পারভেজ তাদের চুরির কারনে মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা ও বাড়িঘরের বিভিন্ন জিনিস পত্র লুটে নিয়ে যায়। তাদের বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিকভাবে বিচার শালিস করায় তারা নিজেদের শুধরে নেয়নি। তাই রাগান্বিত হয়ে ইউপি সদস্য নিজেই লাঠি দিয়ে আঘাত করেছেন।

অভিযুক্ত বারদী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য ওমর ফারুক বলেন, তাদের বিচার করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। চোরেরা তার আত্মীয় হওয়ার কারণে এমনভাবে শাসন করেছেন। বিচার শালিসে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পুলিশে দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি।

সু-শাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সোনারগাঁ শাখার  সাধারণ সম্পাদক  মো. মিজানুর রহমান মামুন বলেন, ভিডিওতে যা দেখলাম কুকুরকেও এভাবে মানুষ মারতে পারে না। পেছনে হাত বেধে দুই ব্যাক্তি একের পর এক আঘাত করছেন। তবে তারা অপরাধী হলে পুলিশে দিতে পারতো।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, দুই যুবকে হাত বেধে নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।