পদ্মা পাড়ের জেলা শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় সাত্তার মাদবর ঘাট এলাকার পদ্মা সেতুর স্থায়ী রক্ষা বাঁধে হঠাৎ করে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে বিলীন হয়ে গেছে একাধিক বসতভিটা ও দোকানপাট।

পদ্মা পাড়ের জেলা শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় সাত্তার মাদবর ঘাট এলাকার পদ্মা সেতুর স্থায়ী রক্ষা বাঁধে হঠাৎ করে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে বিলীন হয়ে গেছে একাধিক বসতভিটা ও দোকানপাট।

ভাঙ্গনে প্রায় ২৭০ মিটার জায়গা নদিতে বিলিন হয়ে যায়। গত বছরের ৩ নভেম্বরে সাত্তার মাদবর ঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকায় বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়ে। এবছর বাঁধটির সংস্কারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত ৭ জুন ভোররাতে সংস্কার করা বাঁধের ১০০ মিটার অংশসহ পাশের আরও একটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়। এক দিনের মধ্যে বাঁধের প্রায় ২৭০ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় সেতুর পূর্ব পাশে, সেতুর ভাটির দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় নদীশাসনের বাঁধও।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, ‘প্রায় এক যুগ আগে সেতু বিভাগ পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষার জন্য এই বাঁধ নির্মাণ করেছিল। গতবছরের নভেম্বর মাসে জাজিরার পূর্বনাওডোবা জিরোপয়েন্ট এলাকায় ১০০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ায় পাউবো ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) যৌথভাবে সমীক্ষা চালায়। তাতে দেখা গেছে, প্রায় ১ কিলোমিটার অংশে বাঁধের নিকটে নদীর গভীরতা বেড়েছে এবং তলদেশ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। বাকি ১ কিলোমিটার অংশেও নদী বাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে এবং মাটির ক্ষয় অব্যাহত রয়েছে। ফলে পুরো বাঁধ এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরি রায় বলেন, আজকের ভাঙ্গনে ৯টি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও ১০ টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। উৎসুক জনতার কারণে ভুক্তভোগীরা তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এজন্য আমরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। আর ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

স্থানীয়রা জানান বাঁধটি মজবুত ও স্থায়ী করা না হলে, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৫০০-৭০০ মিটারের মধ্যে থাকা পদ্মাসেতুর সার্ভিস এরিয়া-২, পদ্মা সেনানিবাস, পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা ভবন, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মঙ্গল মাঝি ও সাত্তার মাদবর বাজারসহ চারটি গ্রামের কয়েকশো পরিবার নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।