বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল বাচ্চা মেয়েটা। ফিরতে রাত হয়ে যাবে বিধায় বড় বোন বলেছিল থেকে যেতে। বড় বোনের কথা অনুযায়ী শিশু আসিয়া থেকে যায়।মেয়েটা বোনের রুমে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে ছিল এককোনায়। দুলাভাইও ছিল রুমে। বড়বোন ভেবেছিল তার হাসবেন্ড যেহেতু আছে তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না। রুমে লাইট নিভানো, ঘুটঘুটে অন্ধকার। তড়িঘরি করে লাইট জ্বালিয়ে দেখে তার আদরের ছোট বোনটা এলোমেলোভাবে পড়ে আছে, চেহারাটা ফ্যাকাশে। বড় বোন বুঝতে পারেনা কি হয়েছে তার আদরের বোনটার সাথে। অনেকক্ষণ পর যখন বুঝতে পারে তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। পরের দিন সকালে বড় বোন শাশুড়িকে হাতজোড় করে তার বোনটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। কিন্তু শাশুড়ি নিষেধ করছিল ঘটনাটা যাতে জানাজানি না হয়, জানাজানি হলে না-কি মানসম্মানে কমতি পড়বে তাদের। এরই মধ্যে মেয়েটা তার বোনকে বলে দেয় তাওই বড় বোনের শশুর (ধর্ষক হিটু) আমার সাথে এমন করছে..... তখন বড়বোন তার স্বামীকে বিষয়টা বললে স্বামী ও তাকে ধরে মারধর করে  তারপরেও বহু কষ্টে শাশুড়িকে রাজি করিয়ে বড় বোন তার ছোট বোন আসিয়াকে নিয়ে হাসপাতালে আসে পরবর্তীতে বিষয়টা সবাই বুঝতে এবং জানতে পারলে ঐ মহিলা (শ্বাশুড়ি) সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপর মাগুরা সদর হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে সুবর্ণা নামের একজন ওদের সার্বিক ভাবে সাহায্য করে। প্রচন্ড ব্লিডিং আর মেয়েটার মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে এবং সেন্স হারিয়ে যায় অবস্থা খারাপ দেখে  তখন ওখানের স্বেচ্ছাসেবী লোকজন এগিয়ে আসে এবং তাদেরকে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় এখন তারা কি করবেন শিশুদের অবস্থা খুবই খারাপ ওখানকার স্বেচ্ছাসেবী ভাইয়েরা তাদেরকে সাহায্য করে এবং জরুরি ভাবে ঢাকা মেডিকেল পাঠায়।এরপর ৯ টার একটু পরে ঢাকা পৌঁছালে সেখানে বেশ কিছু লোকজন তাদেরকে সাহায্য করে এরপরে তাকে ইমারজেন্সিতে ভর্তি করা হয়  এবং  শিশু ওয়ার্ডে নেওয়া হয় সেখান থেকে কিছু স্যাম্পেল টেস্ট এবং বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়।ডাক্তার জানায় ধর্ষণের পর ওড়না জাতীয় কিছু দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া হয় যে কারণে মেয়েটার ব্রেনে অক্সিজেন চলাচল কমে যায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হবে । ডাক্তার বলে গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণে মুখ দিয়ে ফেনা বের হয় এবং সেন্স হারিয়ে যায়। এজন্য অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যায়। এছাড়াও মেয়েটার সারা শরীরে হায়নার মতো খুবলে ক্ষতবিক্ষত করেছে।

রাত ১ টায় ২০৭ নং ওয়ার্ডে অক্সিজেন লেভেল চেক করে এরপর ২ টার সময় মেয়েটাকে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তারা মেয়েটাকে PICU তে নিয়ে যায় এবং ভর্তিসহ যাবতীয় খরচ বহন করে। ডাক্তার জানান বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম তবে আশা আছে বাকিটা আল্লাহ ভরসা। বর্তমান শিশুটি আইসিইউতে আছে।অভিযুক্ত হিটু (বড়বোনের শশুর) এর আগে তার বোন সাথে অশ্লীল আচরণ করে এবং তাকে ধর্ষণও করে। কিন্তু সে তার স্বামীকে জানালে তাকে ধরে মারধর করে। বোনের অভিযোগ ঘরে যেহেতু আমরা তিনজন ছিলাম এবং দরজা ভেতর থেকে বন্ধ তাই সজীব (স্বামী) আসিয়াকে তার শ্বশুরের (হিটু) কাছে  না নিয়ে গেলে আসিয়া ওখানে গেল কিভাবে ? আর সে যদি কিছু না করে তবে বোনের সিচুয়েশনের অবস্থা বললে তার স্বামী (সজীব) কেন তাকে মারধর করবে? হিটু এবং সজীবের বিরুদ্ধে এর আগেও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ওই শিশু কয়েকদিন আগে আপন বোনের শ্বশুরবাড়ি সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালি মাঠপাড়া গ্রামে বেড়াতে যায়। এরপর থেকেই বোনের শ্বশুর হিটু শেখের কুনজরে পড়ে শিশুটি। গত বুধবার রাতে শিশুটি ঘুমিয়ে পড়লে তাকে ধর্ষণ করে হিটু শেখ।। ধর্ষণের এ ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই সজীব শেখকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার (৭ মার্চ) ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।