যেখানে সরকারের নিয়ম মাফিক কোন ফি গ্রহণ করা হয় না। আর যদি কোনো সেবাপ্রার্থী ঘুস দিতে ব্যর্থ কিংবা অস্বীকৃতি জানান তাকে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন মাসের পর মাস। তবে প্রতিটি ঘুস লেনদেনই হয় স্বয়ং নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে। অফিস ঘিরে রয়েছে তার বিশাল এক দালাল চক্র। এমন অভিযোগ গলাচিপা উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে আসা শত শত ভুক্তভোগীর। এমন অভিযোগ উঠেছে নির্বাচন অফিসে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মোসামৎ নাসরিন নাহার হেপির বিরুদ্ধে । সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ক্যাটাগরি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে উপজেলা নির্বাচন অফিস, জেলা নির্বাচন অফিস, বিভাগীয় নির্বাচন অফিস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ের দ্বারস্থ হতে হয় সেবা প্রত্যাশীকে।
নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম গলাচিপায় যোগদানের পরেই গলাচিপা নির্বাচন অফিসে শুরু হয় নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য। ভোটার হস্তান্তর, এনআইডির নাম সংশোধন ও বয়স সংশোধনে ঘুষের জন্য সাধারণ নাগরিকদের করা হয় ব্যাপক হয়রানি। গ্রাম পুলিশ, কম্পিউটার অপারেটর, নামধারী সংবাদ কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের দালালি শুরু হয় গুরুত্বপূর্ণ এ অফিসটিকে কেন্দ্র করে। এ অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আসা রুবেল হোসেন বলেন, আমার নামের বানান সংশোধনের জন্য নির্বাচন অফিসের লোকজন আমার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা দাবি করে।
বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার অনেক বাকবিতন্ড হয়। পরে এক হাজার টাকা দিয়ে তা সংশোধন করেছি। জাকির হোসেন ও মোস্তফা বলেন, নির্বাচন অফিসে নিজেরা সরাসরি না পারলে দালালদের মাধ্যমে টাকা দাবি করে। অনিয়ম, ঘুষ, মানুষের ভোগান্তি করা এ অফিসের নিয়মিত ঘটনা। নিজ অফিসের নানামুখী অপকর্ম, অনিয়ম আর ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়গুলো তদন্ত করার আশ্বাস দেন তিনি। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, এ ধরনের অভিযোগ নিয়মিত আমার কাছে আসায় আমি বারবার নির্বাচন অফিসার ও কর্মচারীদের সতর্ক করেছি। কিন্তু তারা সংশোধন না হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে আমি সংশ্লিষ্ট অফিসকে লিখিতভাবে অবগত করেছি। আশা করি দ্রুত তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন।