নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তিনি শপথ নেন।

সুশীলার শপথের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। আগামী বছরের ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন বলে জানানো হয়।

নেপালের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রেস উপদেষ্টা কিরন পোখারেল এএফপিকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নেপালের সামরিক বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাজা রামের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র সব পক্ষকে সহায়তার আহ্বান জানান। বিক্ষোভকারীদের দাবি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হচ্ছেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা ছিল। এ দৌড়ে নতুন নাম হিসেবে উঠে এসেছিল এক প্রকৌশলীর। আলোচনায় ছিলেন মেয়র বলেন শাহও। কাঠমান্ডু থেকে আল-জাজিরার রব ম্যাকব্রাইড বলেন, সুশীলা কার্কিকে দুর্নীতিবিরোধী আওয়াজ হিসেবে দেখা হয়। জেন-জির কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। 

গত সোমবার শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে নেপালের কে পি শর্মা অলি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় নিরাপত্তাবাহিনী গুলি চালালে অনেকে হতাহত হন। এতে বিক্ষোভ বিধ্বংসী রূপ নেয়। পরদিন আন্দোলনের মুখে কে পি শর্মা অলি ও তার মন্ত্রীরা পালাতে ও আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন। এ সময় অনেকেই হতাহত হন। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ জনে পৌঁছে। আহতের সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। পুলিশ বলছে, নিহতদের মধ্যে নেপালের তিন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া ২১ বিক্ষোভকারী, অন্যান্য ১৮ জন ও ৯ বন্দি আছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে এ আলোচনার মধ্যে নেপালে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশটির সড়কে টহল দিচ্ছে সামরিক বাহিনী। গত মঙ্গলবার রাতে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ ও কারফিউ জারির পর তা গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত বহাল ছিল। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, সহিংসতা চলাকালে সাড়ে ১৩ হাজার বন্দি নেপালের বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে গেছেন। এর মধ্যে এক হাজার জনকে ফের গ্রেপ্তার করা হলেও বাকিরা অধরা।