" সন্ত্রাসী পেশা ছাড়ি আলোকিত জীবন গড়ি " এই শ্লোগানে ২০১৯ সালে পাবনায় ১৪ জেলার ৫৯৫ জন চরমপন্থি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এন এস আইয়ের তত্ত্বাবধানে আত্মসমর্পণ করেন | এরই ধারাবাহিতায় সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল ও বগুড়ায় প্রায় হাজার খানেক চরমপন্থি দলের সদস্যরা আত্মসমর্পণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানা গেছে |

দেশে কতিপয় কিছু চরমপন্থি এখনো আছেন যারা নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে। এমন শ্রেণীর কিছু ব্যাক্তি আছেন যারা কিনা রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের ছত্রছায়ার, শীতল পরশে আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে লালিত-পালিত হচ্ছেন। সর্বহারাদের মধ্যে কেউ আবার আলোর দেখা পায়নি বলে, এখনো অন্ধকার জীবনের মধ্যেই নিজেকে  সীমাবদ্ধ রেখেছেন । চরমপন্থিদের একটি দল সম্প্রীতি অন্ধকার জীবন ছেড়ে আলোর পথে ফিরতে তারা বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছন সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র  । অনুসন্ধানে জানা গেছে - সিরাজগঞ্জ জেলার ৬৯ জন চরমপন্থি দলের সদস্যরা ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল পাবনার শহীদ এডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে এসে, তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ,  অপরাধ মূলক কাজে ব্যবহৃত হওয়া চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, দা,ছুরি  সরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নিকট আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণ করেন| আত্মসমর্পণ কারীরা পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি ( এম এল লাল পতাকা ), সর্বহারা,  নিউ বিপ্লবী ও কাদামাটির অনুসারী ছিলেন।  

অন্য এক অনুসন্ধানে জানা যায় - সেই ৬৯ জন আত্মসমর্পণকারী দের মধ্যে একজন হলো সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার আবু তালেব শেখ রবি (৫৫) তিনি এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হওয়ায় তিনি এলাকাটিতে দাদা ভাই নামে পরিচিত। পাবনায় কথিত  দাদা ভাইয়ের আত্মসমর্পণের পর নিজ এলাকায় এসে অন্যান্য সহযোগীদের আলোর পথে ফেরাতে তাদের কাছ থেকে বিগত দিনের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রুজুকৃত মামলার প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করে,  উল্লাপাড়া উপজেলাধীন র‍্যাব- ১২ সদর দপ্তরে জমা দেন বলে জানা যায়।

যেহেতু আবু তালেব শেখ রবি ওরফে দাদাভাই বিপদগামী সহযোগীদের শোধরানোর নেতৃত্ব প্রদানকারী  তাই এ বিষয়ে জানার আগ্রহ নিয়ে মর্নিং পোস্ট  টিম ছুটে যায় অন্ধকার জীবন ছেড়ে আলোর পথে ফেরা দাদাভাইয়ের কাছে। অনেক প্রচেষ্টার পর অবশেষে দেখা মেলে এক সময়ের আলোচিত  সর্বহারা দলের নেতা আবু তালেব শেখ রবি ওরফে  দাদাভাইয়ের। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরে একদমই মুখ খুলতে নারাজ হন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে দাদাভাই বলেন- আমি নিজে সরাষ্টমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছি এবং আমার সহযোগী যারা আছেন তারা সময় সল্পতার কারণে সেসময় আত্মসমর্পণ করতে পারেনি। তাই আমার সহযোগীরা সহ যারা বিভিন্ন পেশাজীবি সন্ত্রাসী আছেন তারা ইতিমধ্যেই পাপের খড়া পূর্ণ করে ফেলেছেন। তারা অনেকেই নিজেকে সংশোধিত করে এখন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ইতি টানতে চায় তাদের সুন্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান। অনেক প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে রাজি নন তিনি| কথাবার্তার একপর্যায়ে তিনি  বলেন- খবর যদি লিখতে হয় সিরাজগঞ্জের আত্মসমর্পণ কারীদের মধ্যে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা দলনেতা ও উল্লাপাড়া উপজেলার  অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী গ্রুপের লিডার  নসীব ওরফে পিচ্চি মাসুদ (৪০), এর কাছে যান। সেখানে গেলে এ বিষয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে  বলে জানান এই কথিত দাদা ভাই।

উল্লাপাড়া উপজেলায় দাদাভাইয়ের দেওয়া ঠিকানা অনুসারে বিশেষ অনুসন্ধান চালানোর পর হদিস মেলে একসময়ের আলোচিত   উগ্রপন্থী দলনেতা ও শীর্ষ ক্যাডার বাহিনীর নেতা নসীবের । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়-  অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ইতি টেনে নেমে পড়েছেন ষ্টিল হাউজ ব্যবসায়। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়েই কথা হয় বিগত দিনের অপরাধ জগতের ঘটনা এবং তাদের বর্তমানের হালচাল সম্পর্কে।  তিনি এ প্রতিবেদককে জানান-  উপজেলায় আমি ও আমার অনুসারী রয়েছি ৭০ জন তবে সিরাজগঞ্জ জেলায় বর্তমানে  আত্মসমর্পণকারীর সংখ্যা মোট ১৫০ জন।তারা এখন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কতটা তৎপর রয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে কথিত পিচ্চি মাসুদ বলেন- আমি ও আমার অনুসারীরা সমস্ত ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ছেড়ে দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ইতিমধ্যেই আমি ও আমার অনুসারীরা বেলকুচির দাদা ভাইয়ের মাধ্যম দিয়ে আত্মসমর্পণের জন্য,  আমাদের হেফাজতে থাকা সকল অবৈধ  আগ্নেয়াস্ত্র ,  ওয়াকিটকি, ডিবির পোশাক ও  বিভিন্ন ধরণের ধারালো দেশী ও বিদেশী  অস্ত্র র‍্যাবকে জমা দিয়েছি।

তিনি আরো জানান -  সরকার কর্তৃক দ্রুত আমাদের আত্মসমর্পণের ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আাগামীতে আমার সহযোগীদের একত্রিত রাখাটা আমার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়বে | অনুসারীরা একবার ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হত্যা, ডাকাতি, ধর্ষনের মত জঘন্যতম অপরাধে লিপ্ত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তাই বিষয়টি  দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি বিনীত আহবান জানান কথিত এই পিচ্চি মাসুদ (৪০)। বস্তুনিষ্ঠ ও অনুসন্ধানী খবর জনগণের মাঝে প্রকাশ করতে "মর্নিং পোস্ট "সদা বদ্ধপরিকর।  তাই সিরাজগঞ্জের দাদা ভাই ও উল্লাপাড়া উপজেলায় তার ঘনিষ্ঠতম সহযোগী নসীবের দেওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ  তথ্যের ভিত্তিতে মর্নিং পোষ্ট  টিম এবারে সিরাজগঞ্জ থেকে পা বাড়ান পার্শ্ববর্তী জেলা পাবনার আটঘরিয়ার পথে। পাবনা জেলার এক সময়ের আলোচিত ভয়ংকর কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি ও সর্বহারাদের বর্তমান কর্মকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে "অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পর্ব - ২" প্রকাশিত হবে আগামীকাল| বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন দেশের অন্যতম  ব্যতিক্রমী জাতীয় অনলাইন  "মর্নিং পোস্ট "।