সুপেয় পানির দাবিতে বরগুনায় পটগান এবং আলোচনা সভা এ উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানি সংকট নিরসনে ভ‚গর্ভস্থ পানির ব্যবহার বন্ধ করা, এলাকাভিত্তিক বড় বড় পুকুর, খাল, জলাশয় খনন করে তাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা, খাসজমিতে মিঠা পানির আধার তৈরি করার দাবি জানিয়েছে বরগুনা জেলার যুব, নারী, পুরুষ, বিভিন্ন পেশাজীবী, পানি সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।

গতকাল শনিবার(১৩.০৮.২০২২ তারিখ) বরগুনা জেলার সদর বাজারের সিদ্দিক মঞ্চে ”বিনামূল্যে নিরাপদ ও পর্যাপ্ত সুপেয় পানি প্রাপ্তি আমার অধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান, জাগোনারী এবং একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত উপক‚লজুড়ে পানি অধিকার প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা এই দাবি জানান। জাগোনারীর প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা হাসির সভাপতিত্বে প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব মৃধা(সভাপতি বরগুনা এনজিও ফোরাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ) অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এ্যডভোকেট সঞ্জীব কুমার দাস(সভাপতি, বরগুনা প্রেসক্লাব)।

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রইসুল ইসলাম রিপন (কমিশনার ও প্যানেল মেয়র বরগুনা পৌরসভা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ), জাকির হোসেন মিরাজ(নির্বাহী প্রধান, সিবিডিবি), হাসানুর রহমান ঝন্টু(জেলা প্রতিনিধি চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ প্রতিদিন), জাহাঙ্গীর কবির মৃধা(বিশিষ্ট সাংবাদিক), হেদায়াতুল্লাহ (সভাপতি বরগুনা সদর উপজেলা যুব নেটওয়ার্ক ) প্রমুখ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। বিশিষ্ট গায়েন জনাব খোকন বয়াতি ও তার দল প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর পটগান পরিবেশন করেন।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে পড়ছে উপক‚ল। উপক‚লীয় নদীগুলোর লবণাক্ততা ক্রমশ বেড়ে চলছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উপক‚লীয় পানির উৎসগুলো লবণাক্ত হয়ে পড়ায় পানের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ফলে উপক‚লীয় জেলাগুলোতে সুপেয় পানির সংকট বেড়েই চলেছে। একদিকে লবণাক্ততার ফলে ভ‚-উপরিস্থ পানি পানের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে ভ‚-নিম্নস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অনেক গভীর নলক‚পেও পানি উঠছে না। পৌরসভার প্যানেল মেয়র রইসুল ইসলাম রিপন বরগুনা পৌরসভার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লানটি পূনরায় চালু করার দাবি জানান।

তিনি বলেন পৌরসভার ২টি পাম্প চালু রাখার জন্য দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এখন ১২০০ ফিটেও অনেক জায়গায় পানির স্তর পাওয়া যাচ্ছে না। উপক‚লীয় এলাকায় মানুষ নদী ও পুকুরের দ‚ষিত পানি পানের কারনে ডায়রিয়া এবং কলেরাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। খিঁচুনি, জরায়ু সমস্যাসহ গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দ‚র-দুরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে নারীরা বিভিন্ন ধরণের নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। তাই জরুরীভাবে উপক‚লীয় এলাকায় সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে পিএসফ (পন্ড স্যান্ড ফিল্টার) এবং রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম স্থাপন করলেও সেগুলো পর্যাপ্ত নয়, অন্যদিকে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। সভায় উপক‚লীয় জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানি সংকটটে জরুরি বিবেচনায় নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ তথা সুপেয় পানি অধিকার নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের উপর বক্তারা গুরুত্বপূর্ন আলোচনা করেন এবং গায়করা কবিগান পরিবেশন