কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ১ নং ওয়ার্ডের তেতৈয়া সওদাগর পাড়ায় (তেতৈয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন) দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক বনায়নকৃত বিশাল আকারের কয়েকটি উঁচু পাহাড় সাবাড় করে বালি বানিজ্য করছে একটি সিন্ডিকেট।এতে সহায়তা করছে খোদ বিট কর্মকর্তা।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন পিএমখালী রেঞ্জের খুরুশকুল বিটের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি উঁচু পাহাড় নিধনযজ্ঞ চললেও এখন পর্যন্ত কোন ধরনের আইনী পদক্ষেপ নেয়নি বন বিভাগ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুরুশকুল তেতৈয়া সওদাগর পাড়া এলাকার শফিউল আলমের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী দিদারুল আলম,ছাত্রলীগ নেতা তামজিদ পাশা, মোহাম্মদ আলমের ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা হেদায়ত উল্লাহ্ বাবুল, মোহাম্মদ ইসলাম প্রকাশ মাতইসলাম,মৃত মিছবাহ উদ্দিন প্রকাশ পাঁচকড়ই'র ছেলে রশিদ মিয়া প্রকাশ লজিং মিয়া,তার স্ত্রী পারভিন আক্তার,তার ভাই মোবারক হোসেন ও মৌলভী মোহাম্মদ হোসেন এর ছেলে কামরুল ইসলাম এসব পাহাড় কাটায় জড়িত।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৫ আগষ্ট থেকে আত্মগোপনে চলে যায় বাবুল, কাজী দিদার ও তামজিদ পাশা। মাদক মামলা আটক হয়ে জেলে আছে লজিং মিয়া৷ বর্তমানে মাত ইসলাম,কামরুল ইসলাম,মোবারক হোসেন ও পারভিন আক্তার এসব পাহাড় কেটে বালি বিক্রির তদারকি করছেন বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা বলছেন ক্ষমতার প্রভাবকাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ বিধ্বংসী এমন কর্মকাণ্ড করা হলেও তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বনবিভাগ বিষয়টি জানার পরেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি৷ তারা আরও বলেন,দৈনিক ৫-৬ গাড়ী বালি প্রতিনিয়নত বিক্রি করা হচ্ছে। এখান থেকে স্থানীয় বিট অফিসারেরা ভাগ পায় বলে তারা কোন ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নেয় না৷ পাহাড় কাটার কারনে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি পাহাড় কাটা বালি চলাচলের রাস্তার উপর স্তুপ করে রাখার কারনে মানুষের যাতায়াতেরও চরমভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাদের দাবি দ্রুত পাহাড় কাটা বন্ধ করে সেখানে বনায়ন করে করে পরিবেশ সুরক্ষার ব্যবস্থা করার।
বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন,বর্তমান বনবিভাগের লোকজন বনের জায়গা বিক্রির সাথে জড়িত বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।এটি দুঃখজনক, এসব বন্ধ করা দরকার বন বিভাগের লোকজন আন্তরিক হলে কোন ভাবেই বনের জমি, পাহাড় ও বনের গাছ কাটা সম্ভব হয় না।তাদের কে আরও দ্বায়িত্বশীল হতে হবে। খুরুশকুল বিট কর্মকর্তা মোশাররফকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করা হলে, তিনি আমত আমতা করে আপনার যা করার তা করেন বলে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক বাবুলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।তবে সিন্ডিকেটের অন্যতম হেদায়েত উল্লাহ্ বাবুলের মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি এসবের সাথে জড়িত নন।