কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ‘ইয়োলো-বিল্ড সি’ নামে বিরল প্রজাতির সাপের দেখা মিলেছে। গতকাল শুক্রবার (১ জুলাই) সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সাপটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে এই সাপ দেখতে পর্যটকরা ভিড় করেন।

কক্সবাজার সৈকতের বীচকর্মী মাহবুব বলেন, সুগন্ধা পয়েন্ট ‘ইয়োলো-বিল্ড সি’ সাপটি দেখতে পান স্থানীয় কয়েকজন । তারা গায়ে বালু মারতে থাকলে সাপটি সাগরে চলে যায়। এটি বিষধর সাপ। এদের পেটের রঙ হলুদ এবং দেহের উপরিভাগ কালো। 


গত মাসে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতেও দেখা মিলেছিলো এই সাপের। পরে এটি আবার জোয়ারে গভীর সমুদ্রে ভেসে যায়। স্থানীয় পরিবেশবাদী ও সাংবাদিক আহমদ গিয়াস জানান, গোটা বিশ্বের স্থল ও সমুদ্র ভাগের সব সাপের মধ্যে ‘ইয়োলো-বিল্ড সি’ সাপ চতুর্থ। এটা বিষধর সাপ। সচরাচর এদের দেখা যায় না। গত বছরের জুনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এই সাপ দেখা গিয়েছিল।


ওয়ার্ল্ডফিসের সহকারী জীব বৈচিত্র্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, গোটা বিশ্বের স্থল ও সমুদ্র ভাগের সকল সাপের মধ্যে এটা বিষধর হিসেবে ৪র্থতম। এ সাপ সচরাচর দেখা যায়না। বাংলাদেশে ৯৬ প্রজাতির সাপের উল্লেখ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২৯টি প্রজাতির সাপ বিষধর (যার অধিকাংশেরই চিকিৎসা এ দেশে নেই)। এর মধ্যে ১৩টি প্রজাতিই সামুদ্রিক সাপ। এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে ইয়েলো-বিল্ড সী স্নেক বিষের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। এ সাপের পেটের রঙ হলুদ। দেহের উপরি ভাগ কালো। এরা থাকে সমুদ্রে। কালো দেহে অদ্ভুত হলুদের ছোঁয়া থাকায় এ সাপ দেখতে খুব সুন্দর। এরা হাইড্রোফিডে পরিবারভুক্ত।


সাপ বিশেষজ্ঞরা জানান, এটা মারাত্মক বিষাক্ত জাতের সাপ। সাপের পেটে উজ্জ্বল বর্ণের হলুদ ছড়িয়ে আছে। আছে লেজের দিকে অদ্ভুত পেঁচানো পেঁচানো দাগ। দেখলে মনে হয় সাইকেলের প্যাডেল। গায়ের উপরি ভাগ কালো নীল বর্ণ। এরা পানির তলদেশেই বেশি থাকে। প্রায় ৬৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এরা ঘণ্টায় ৩ থেকে ৭.১ কিলোমিটার গতিতে সাঁতার কাটে। সামনের দিক সংকুচিত শরীর করে লেজের সাহায্যে এগিয়ে যায়। এদের দৃষ্টিশক্তি কম। তাই তারা চলাচলের সময় মুখের চারপাশে উৎপাদিত কম্পন দিয়ে মাছের সন্ধান করে থাকে।