এক বছর ধরে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারী একজন সাময়িক সংযুক্তি নিয়ে টেনেটুনে চালাচ্ছেন স্কুলটি। রয়েছে শিক্ষক সংকট। ফলে নেই পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ। অবস্থা এখন এমন যে, হযবরল পরিস্থিতি। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের উপর। এমন দৈন্যদশা দেখে অবিভাবকরা তাদের সন্তানের লেখাপড়ার বিষয়ে চিন্তিত। অনেকেই আস্থা হারিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

ফলে ক্রমেই কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এই চিত্র কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ৭৪ নং ফেকামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। প্রধান শিক্ষক পদ শূণ্য, একজন সহকারি শিক্ষক সাময়িক সংযুক্তি নিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে পাঠদান করছেন। তিনি সদ্য আরো এক বছর সাময়িক সংযুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন। ফলে ১০ বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট চলমান রয়েছে। কিন্তু নতুন শিক্ষক পদায়ন করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য উসমান গণী সহ কয়েকজন এলাকাবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেছেন। অভিযোগে তারা বলছেন, বিদ্যালয়ে ৬ জন সহকারী শিক্ষক পাদয়নে থাকলেও বর্তমানে ৩ জন পাঠদান করছেন। একজন সহকারী শিক্ষক দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সংযুক্তি নিয়ে একসাথে দুই স্কুল চালাচ্ছেন। মসুয়া ১ নং সরকারি প্রাথমিক স্কুলেও তিনি পাঠদান করেন। সম্প্রতি তিনি আরো একবছরের জন্য সংযুক্তি নবায়ন করেছেন।

তিনি নিজস্ব সুযোগ সুবিধার জন্য এটি করছেন বলেও অভিযোগ।  যদিও সংযুক্তি নেওয়া ওই সহকারী শিক্ষক তাসমীর শেখ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'নিজের সুবিধার জন্য নয়, দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাই পালন করছি।' জানা গেছে, সহকারি শিক্ষক তাসমীর শেখ উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ৭৪নং ফেকামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়নের কিছুদিন পর ২০১৩ সালে সাময়িক সংযুক্তি নিয়ে একই উপজেলার মসূয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান করছেন। এলাকাবাসী জানান, সহকারী শিক্ষক তার ব্যক্তিগত সুবিধার কারণে সাময়িক সংযুক্তির মেয়াদ পুনরায় আরো এক বৎসরের জন্য বর্ধিত করেছেন। এতে এলাকার শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংযুক্তি না নিয়ে তিনি বদলী হয়ে যেতে পারতেন।

তাহলে অত্র বিদ্যালয়ে অন্য একজন শিক্ষককে পদায়ন করা যেতো। বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করার লক্ষে তাসমীর শেখ এর সাময়িক সংযুক্তি বাতিল অথবা তাকে বদলী করে অন্য কোন শিক্ষককে ফেকামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়নের দাবি জানান। সহকারি শিক্ষক তাসমীর শেখ  জানান, সাময়িক সংযুক্তি বা বদলির বিষয়টি শিক্ষা অফিসের। অফিসের সিদ্ধান্তেই আমি দায়িত্ব পালন করছি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মো. আফজাল হোসেন বলেন, তাসমীর শেখ কতদিন ধরে সংযুক্তি নিয়ে আছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে উনি যে স্কুলটিতে আছেন সেটি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত।  তিনি বিএড করেছেন ও ওনার পারিবারিক সুবিধার জন্যই সংযুক্তি দেওয়া হয়েছে। মার্চ মাসে আবার বদলীর একটি প্রক্রিয়া হবে তখন ফেকামারা স্কুলে একজনকে পদায়ন করলে এ সমস্যা আর থাকবে না। সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।