তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক কিশোরীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে মরদেহ চাম্বল গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের মা হালিমা বেগম আদালতের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাতে কলাপাড়া থানায় মামলাটি (নং-১৭) রেকর্ড করা হয়।
মামলায় একই এলাকার জয়নাল মৃধা (৩৫), তাইফুর ইসলাম সোহেল (৩০), সুজন (২৫), হাসান (২৫) এর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ছোট বালিয়াতলী গ্রামে গত ৩০ জুন রাত ৮টা ৩০ মিনিট থেকে ৯টার মধ্যে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই রাতে কিশোরীকে আসামিরা ধর্ষণ শেষে হত্যা করে বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ের গাছে ঝুলিয়ে রাখে। নিহতের গলায় রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন, যৌনাঙ্গে ক্ষত এবং বুকে আঘাতের দাগ পাওয়া যায়। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
হালিমা বেগম জানান, তিনি সেদিন এক অসুস্থ পড়শিকে দেখতে বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে আসার পথে বাড়ির সামনে মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। তার স্বামী ঢাকায় কাজ করায় বাড়িতে থাকতেন না। মা, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তারা ওই বাড়িতে বসবাস করতেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামি তাইফুর ইসলাম সোহেল দীর্ঘদিন ধরে হালিমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে রাজি না হওয়ায় ২০২১ সালে ও ২০২২ সালে দু’বার তাকে মারধর করা হয় এবং এ নিয়ে মামলা হয়। এরপর হালিমার স্কুলগামী মেয়েকে পথেঘাটে উত্যক্ত করত আসামিরা। ২০২৪ সালের আগস্টে মেয়ের বাবাকেও মারধরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় থানায় ও সেনাক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন হালিমা।
তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, ভ্যাজাইনাল সোয়াব, রক্তমাখা জামা-পায়জামা ও ওড়না জব্দ করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আসামিদের চিহ্নিত করে সঠিক বিচার চান তিনি। পাশাপাশি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন।
এ বিষয়ে কলাপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে এজাহার হিসেবে গণ্য হয়েছে। এর আগে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।