কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্ব-পশ্চিমে এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্লাষ্টিকের বোতল, পলিথিন ও ডাবের খোসা। এসব ময়লা-আবর্জনায় পর্যটকদের চোখে মেুখে লক্ষ্য করা গেছে বিরক্তির ছাপ। প্রতিনিয়ত সৈকত পরিচ্ছন্ন না করা এবং কিছু অসচেতন পর্যটকদের ফলেই সৈকেতের এমন অবস্থা হয়েছে বলে দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।

মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইট-পাথরের পরিবেশ থেকে নিজেদের একটু প্রশান্তি দিতে সমুদ্র ও পাহার বেষ্টিত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সুন্দর প্রকৃতি ও পরিবেশের খোঁজে ভ্রমণ করেন পর্যটকরা। তেমনই একটি পর্যটন কেন্দ্র সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের লীলাভূমি কুয়াকাটা সৈকত। এখানে এসে পর্যটন স্পটগুলো দেখে মুগ্ধ হয়েছে তারা। তবে এই সমুদ্র সৈকতের যত্রতত্র ছড়িয়ে- ছিটিয়ে আছে পলিথিন আর প্লাষ্টিক। এতে শুধু সমুদ্র সৈকতের পরিবেশই নষ্ট হচ্ছে না সাথে সাথে সমুদ্র সৈকত এলাকার জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। খুলনা থেকে আসা পর্যটক রিয়া-বাদশা দম্পত্তি বলেন, কুয়াকাটা এতো সুন্দর একটি জায়গা সবকিছুই বেশ ভালো লেগেছে। তবে কুয়াকাটা সৈকতে অনেক প্লাষ্টিক বর্জ্য যেগুলো আমরা অনেকটা বিরক্ত হয়েছি।

অবশ্যই এগুলো পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন না রাখলে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যভাবে ভ্রমন করতে পারবোনা। বগুরা থেকে আসা পর্যটক ইমরান সরকার জানান, আমরা বন্ধুরা মিলে কুয়াকাটায় এসেছি। এখানের পরিবেশটা অনেক সুন্দর। তবে সৈকতে পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিবেশটা বিনষ্ট করছে। মূলত: আমরা যারা ভ্রমনে আসি অনেকসময় তারাই সৈকতটাকে অপরিস্কার করে ফেলি। সবাই একটু সচেতন হলে সৈকতে এই দুরাবস্থা থাকতো না। তবে আমরা বন্ধুরা মিলে কিছু পলিথিন ও প্লাষ্টিক কুড়িড়ে ডাষ্টবিনে ফেলেছি, তাই সবাইকে এই সৈকত এলাকায় পলিথিন ও প্লাষ্টিক না ফেলার অনুরোধ জানাচ্ছি। 

কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশনের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, সৈকতকে পরিস্কার রাখার জন্য আমরা ১০-১২টি পেশার ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে ট্রেনিং করিয়েছি। এছাড়াও টোয়াকের উদ্যোগে প্রায় দুইশত ময়লা রাখার ডাষ্টবিন বিভিন্ন পয়েন্টে দেয়া হয়েছে । তবে সরকার যদি আরো একটু খেয়াল দিতো তাহলে সৈকত সব সময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক জানায়, সৈকতে যেন ময়লা না ফেলা হয় সে জন্য আমরা বার-বার মাইকিং করে সতর্ক করছি, প্রতি সপ্তাহে একবার আমাদের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাই।

তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যদি সবসময় লোক নিয়োজিত রাখে তাহলে সব সময়ই সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটা সৈকতকে পরিস্কার রাখার জন্য পৌরসভা ও আমি ব্যক্তিগত ও সার্বিকভাবে কাজ করছি। আমাদের কয়েকটি টিম সকাল-বিকেল ময়লা পরিস্কার করছে। তবে কিছু অসচেতন পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের কারনে এই সমস্যাটা মাঝে মাঝে হয়। কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, কুয়াকাটা সৈকতে যত্রতত্র ময়লাগুলোকে পরিস্কার এবং সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে আমরা শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।