নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, বাড়ির সীমানা খুঁটি উঠিয়ে ইচ্ছা মতো পুঁতে রাখা এবং খুনের হুমকি প্রদান করায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী ।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায় , উপজেলার চিরাং ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ডের বাট্টা (চকবাট্টা) গ্রামের বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী মোঃ হাবিবুল ইসলাম খানের স্ত্রী মোসাঃ স্বনজুরা আক্তার প্রতিবেশী জাকির (৩১), সাদেক মিয়া (৬৩), আলমগীর (৩৫), জাহাঙ্গীর (৩৭), সাকিব (২৩), কবির (২৫) ও জাহেদা (৫৫) সহ মোট ৭জনকে আসামী করে এ অভিযোগ দায়ের করেন । মোসাঃ স্বনজুরা আক্তারের স্বামী বিদেশে থাকে । তাঁর কোন পুত্র সন্তান নেই । তিন কন্যা সন্তানের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী তাদের নিয়েই তাঁর সংসার । এই অসহায়ত্বের সুযোগেই বিবাদীরা সব সময় অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে । বাড়ির সীমানাকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালেও বিবাদীরা এই নারীকে মারধর করে ভীষণভাবে আহত করে এই মর্মে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয় । সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ঐ নারীর বসত ঘরের পশ্চিমপার্শ্বে থাকা আম গাছ, কাঁঠাল গাছ কাটতে থাকলে বিবাদীদের বাঁধা দেয় । ফলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, বাড়ির সীমানা খুঁটি উঠিয়ে ইচ্ছা মতো পুঁতে রাখে ও খুন করার হুমকি প্রদান করে বিবাদীরা । পরে ভুক্তভোগী নারী তাঁর কলেজ পড়ুয়া দুই মেয়ের নির্বিঘ্নে চলাফেরায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন থানায় ।
রবিবার (১০ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে কথা হলে মোসাঃ স্বনজুরা আক্তার কান্নাঝড়া কণ্ঠে বলেন, অনেক বছর যাবত বিবাদীরা বাড়ির সীমানা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আমাকে অত্যাচার ও নির্যাতন করে আসছে । আমার কোন ছেলে সন্তান নেই , আমার স্বামী বিদেশে থাকে । তাই এই ঘটনার পর থেকে আমি ও আমার সন্তানেরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি ।
মোসাঃ স্বনজুরা আক্তারের দুই মেয়ে ডরিন আক্তার (২৫) মাস্টার্সে ও পপরিন আক্তার (২৩) অনার্সে ময়মনসিংহ ও ঢাকায় পড়াশোনা করছে । তাঁদের সাথে কথা হলে তাঁরা বলেন , আমার মা বাড়িতে আমার একমাত্র প্রতিবন্ধী বোনকে নিয়ে থাকেন । জানি না কখন কী হয় । আমরা তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি ।
বিবাদী সাদেক (৬৩) ও আলমগীর (৩৫) এ অভিযোগ বিষয়ে বলেন, আমরা বাড়িতে ছিলাম না । তবে শুনেছি তেমন কিছু হয় নি ।
অভিযুক্ত জাকিরের স্ত্রী বলেন, গাছের ডাল কাটার জন্যে স্বনজুরা আক্তারই বলেছিলো । কিন্তু তাঁর পুরুষ লোক না থাকায় আমার স্বামী কাটতে যাওয়ায় ঝগড়ার সৃষ্টি হয় ।
চিরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ এনামুল হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে প্রশাসনের সহায়তায় সমাধানের চেষ্টা করছি । উভয় পক্ষকে বলেছি শান্ত থাকার জন্যে ।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার তদন্ত অফিসার মোঃ তানভীর মেহেদীর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছি । মূল সমস্যা বাড়ির সীমানা নিয়ে । উভয় পক্ষই বলেছে খুব দ্রুত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আমিন এনে সমস্যার সমাধান করা হবে । অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।