খুলনার ডুমুরিয়ায় আন্তঃজেলা গরুচোর চক্রের ৪ সক্রিয় চোর সদস্য ও ৫টি চোরাই গরুসহ ১টি পিকাপ ভ্যান আটক করেছে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ।আটককৃতরা হলো,বাগেরহাট সদর থানার দশআনী গ্রামের ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে জুয়েল হাওলাদার (৩২),মোল্লাহাট থানার কাহালপুর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে মোঃ ইকবাল শেখ (১৯),খুলনার রূপসা থানার নৈহাটি গ্রামের হাবিব শেখের ছেলে সালমান শেখ (১৯) ও কোদালিয়া গ্রামের ইবুল শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৬)। এছাড়া এজাহার ভুক্ত ২ আসামি পলাতক রয়েছে, বাগেরহাট মোল্লাহাট থানার কাহালপুর মধ্যপাড়ার জাফর মীরের ছেলে মোঃ হুমায়ন মীর ও ফকিরহাটের মোঃ এমদাদ হোসেন।
ডুমুরিয়া থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়,ডুমুরিয়া থানায় দায়িত্বরত এসআই মোঃ মিজানুর রহমান ডুমুরিয়া থানার সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ অত্র থানা এলাকায় দিবাকালীন মোবাইল টিমে ডিউটি চলাকালীন সময়ে ডুমুরিয়া বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, ডুমুরিয়ার মেছাঘোনা এলাকা হতে কয়েকজন গরু চোর গরু চুরি করে ট্রাকে করে নিয়ে খুলনার দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত সংবাদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে এসআই মোঃ মিজানুর রহমান, এএসআই মোঃ লাভলু মিয়া, ডুমুরিয়া বাসষ্ট্যান্ডে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের উপর চেকপোষ্ট বসায়। গত ৫ এপ্রিল শনিবার দুপুর ২টার দিকে আসামীরা ডুমুরিয়া বাসস্ট্যান্ড হয়ে খুলনার দিকে যাওয়ার সময় তাদের ট্রাকটি সিগন্যাল দিয়ে গাড়ী থামানোর চেষ্টা করলে তারা গাড়ী না থামিয়ে চেকপোষ্ট উপেক্ষা করে দ্রুত গতিতে খুলনার দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এসআই মোঃ মিজানুর রহমান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ আসামীদের পিছু ধাওয়া করে।
আসামীদের ট্রাকে থাকা ড্রাম নিক্ষেপ করে পুলিশদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে থাকে । এসআই মোঃ মিজানুর রহমান তাদের পিছু ধাওয়া করে হরিনটানা থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনগনের সহযোগিতায় খুলনা মহানগরের হরিনটানা থানাধীন রাজবাধ এলাকায় আরিফের চায়ের দোকানের সামনে থেকে ০১টি চোরাই গরু ও চোরাই কাজে ব্যবহৃত একটি হলুদ রংয়ের ট্রাক, যার রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো-ন-১৬-২৪৫২ সহ ৩ জনকে আটক করে। ঐ সময় মোঃ এমদাদ হোসেন নামে একজন সুকৌশলে পালিয়ে যায়। আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তারা সবাই পেশাদার চোর। তারা খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও যশোরসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি করে বেড়ায়। চুরি করা গরু মোঃ ইকবাল কসাই ও মোঃ হুমায়ন মীর এর নিকট বিক্রয় করে থাকে। উক্ত চুরি করা গরুটি তারা বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট থানাধীন মোঃ ইকবাল হোসেন ও হুমায়ন মীর এর নিকট বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। বিগত ২০/২৫ দিন পূর্বেও গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন গোলতলী এলাকা হতে ০৫ টি বিভিন্ন রংয়ের ও সাইজের গরু চুরি করে এনে রাত্রীবেলায় ইকবাল হোসেন ও মোঃ হুমায়ন মীর কসাইয়ের নিকট বিক্রি করেছে। উক্ত ঘটনার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)জনাব মোঃ আক্তারুজ্জামান লিটন এর নেতৃত্বে ডুমুরিয়া থানায় জিডি করা হয়, জিডি নং-২১৯
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চিকিৎসার জন্য ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এজাহারনামীয় আসামী রাসেল শেখ গুরুতর অসুস্থ্য হলে তাকে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখে। অপর ০২ জন আসামীর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে থানায় নিয়ে আসা হয়। গত ৬ এপ্রিল এসআই মোঃ মিজানুর রহমান, এএসআই মোঃ লাভলু মিয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ মোল্লাহাট থানা পুলিশের সহায়তায় আসামী মোঃ ইকবাল হোসেন এর বাড়ীতে অভিযান করে তাকে গ্রেফতার করেন। আসামী মোঃ ইকবাল হোসেন আরো তথ্য দেন যে, আসামী হুমায়ন মীর এর বাড়ীতে চোরাইকৃত গরু রয়েছে। তখন আসামী হুমায়ন মীর এর বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করলে তিনি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। আসামী ইকবাল হোসেন এর দেখানো মতে পলাতক আসামী হুমায়ন এর বাড়ীর মধ্যে গোয়াল ঘর হতে ০৪টি ছোট বড় বিভিন্ন রংয়ের গরু উদ্ধার পূবর্ক জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা শেষে এসআই মোঃ মিজানুর রহমান আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে সূত্রে বর্নিত মামলাটি রুজু হয়।
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা জানান, আমরা চারজন আসামি ও পাঁচটি চোরাই গরু সহ চোরাই কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছি। তবে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।