গরমে কুমিল্লায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়ায়। অনেককেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালে। কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বয়স্ক রোগীদের ভর্তি হবার সংখ্যা বাড়ছেই। মার্চের শুরু থেকেই কুমিল্লা নগরীতে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি উপজেলা গুলোতেও বাড়ছে রোগীর হার। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, মার্চ মাসে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৯১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী, হোমনায় ২২০ জন, বুড়িচংয়ে ১৪২ জন এবং চান্দিনায় ১৩৮ জন। অন্যান্য উপজেলাতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
গতকাল বৃহষ্পতিবার কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে শিশু রোগীর চেয়ে বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। সব রোগীদেরই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স শারমিন আক্তার বলেন, এখন যেসব রোগীরা আসছে তারা বেশির ভাগই প্রাপ্ত বয়স্ক। কুমিল্লা নগরীর চর্থা, চকবাজার, কালিয়াজুড়ি এলাকা থেকে রোগীরা আসছে। তারা আবার চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে। তবে সম্প্রতি ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। নগরীর সাতরা এলাকার ডায়রিয়া আক্রান্ত এক বছর বয়সী নাতনি মীমকে নিয়ে সদর হাসপাতালের ভর্তি আছেন শাহানা বেগম। শাহানা বেগম বলেন, গত তিন ধরে গরম বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে নাতনির শরীর খারাপ হতে থাকে। তারপরে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শ নিলে তারা হাসপাতালে আসতে বলে।
চকবাজার এলাকা থেকে আসা ডায়রিয়া আক্রান্ত তরুনী তাসফি বলেন, প্রচণ্ড গরমে শরীর খারাপ হতে শুরু করে। মাথা ঘুরে প্রথমে বমি হয়। এরপর থেকেই ডায়রিয়া শুরু। ঔষধ খেয়েও মনে হচ্ছে লাভ হয়নি। পরে হাসপাতালে আসতে হলো। এদিকে মার্চ মাসের শুরুতে তাপামাত্রা বাড়তে থাকার সাথে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, ডায়রিয়া মহামারি আকার ধারন করেনি। তবে প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। আশেপাশের উপজেলা থেকেও রোগীরা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, কুমিল্লায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়লেও আমরা সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। সাধারণ রোজার সময় ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার গ্রহনের প্রবনতা বাড়ে বলেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে, এবার রোজা এবং দাবাদাহ একই সময়ে যে কারণে একটু রোগীর সংখ্যা বেশি। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবাইকে যতটা সম্ভব ছায়ায় থাকতে হবে। ঠান্ডা জাতীয় খাবার খেতে হবে। যতটা সম্ভব ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার পরিহার করা দরকার।