এই বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাহাঙ্গীরকে তো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়নি, তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িকভাবে বরখাস্ত যেসব কারণে করা হয়েছে, সেগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মেয়র পদে ফেরার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে গাজীপুরে কালিয়াকৈরের মৌচাকে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১৪তম জাতীয় যুব রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক ক্যাম্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।মন্ত্রী স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে দেশে অন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান। মানবসেবায় প্রতিষ্ঠানটি বহুমুখী অবদান রাখছে। বিশেষ করে আগামী প্রজন্মকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি জনহিতকর কাজে উদ্বুদ্ধ করছে।’
দেশের জরুরি পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবকদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এ টি এম আবদুল ওয়াহাব (অব.)। পরে ১৮৫৯ সালে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যকার সলফেরিনো যুদ্ধের পটভূমিতে করা নাটক মঞ্চায়িত হয়। তিন দিনের এই জাতীয় ক্যাম্পে বাংলাদেশসহ সাতটি দেশের ১৫০০ যুব স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন। এদিকে, গত শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয় বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ঘোষণার পর থেকেই দল থেকে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের দলে ফেরার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
জাহাঙ্গীর আলম দলে ও মেয়র পদে ফিরছেন খবর প্রচার হওয়ার পর গাজীপুরের সর্বসাধারণের মাঝে আনন্দ ও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। এত দিন দলে ‘জাহাঙ্গীর পন্থি’ হিসেবে যারা কোণঠাসা ছিলেন তাদেরও উজ্জীবিত হতে দেখা যাচ্ছে। জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যেই আনন্দ মিছিল করেছেন। সেখানে বিগত দিনগুলোর তুলনায় নেতাকর্মীদের ভিড়ও বেড়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।
ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এতে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন ‘জাহাঙ্গীর পন্থিরা’। থমকে যায় সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গাজীপুর, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, নওগাঁ, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় করা হয় সাতটি মামলা। ইতিমধ্যে সেসব মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।