সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় কৃষি অফিসের দেওয়া প্রণোদনা ও বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে দেওয়া প্রদর্শনীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভুট্টা চাষ, আর এ ভুট্টা চাষের ফলে পাল্টে যাচ্ছে কৃষকদের জীবনমান। এতে বেশি ফলনের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে স্বল্প খরচে অধিক ফলন হবে বলে আশা কৃষকদের।
কৃষি অফিস ও বিভিন্ন প্রকল্পের প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। ভুট্টার আবাদে যেন সবুজের সমারোহ। শীতকালীন সবজির আবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ভুট্টার আবাদে বেশি আগ্রহী হয়েছেন। এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশায় দিন-রাত পরিশ্রম করছেন কৃষকরা।
উপজেলার মধ্য জাফলং ইউনিয়নের বাউরবাগ এলাকায় ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারে ভুট্টার ফলনে বিল্পব ঘটবে, এমনটাই প্রত্যাশা উপজেলা কৃষি অফিসের।
ভুট্টা চাষী জহিরুল ইসলাম বলেন,আমি গত বছর ৫০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ভুট্টার ভালো ফলন ও ভালো মুনাফায় এ বছর ১০০ বিঘার কাছাকাছি জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। গতবার আমি সকল ধরনের খরচ বাদে ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা আয় করেছি। এ বছর তার দ্বিগুণের অধিক লাভের প্রত্যাশা আসা করছি।বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ করলে বিক্রয়ের সময় কোন চিন্তা করতে হয় না,জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকে ভুট্টা ক্রয় করে নিয়ে যায়।তার জন্য বাড়তি কোন চিন্তা পেরেশানির দরকার হয় না। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় ভুট্টা চাষ দিন দিন বেড়ে চলেছে। ধান ও অন্য ফসল চাষে লাভ কম হওয়ায় বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উচ্চ ফলনশীল জাত, অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারও তার ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ৮৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় উপজেলা চল্লিশ জন কৃষককে ভুট্টা চাষে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে রয়েছে দুই কেজি করে বীজ ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমপিও সার। এছাড়া উপজেলার ৮০ জনের অধিক কৃষককে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। এক একটি প্রদর্শনীতে কৃষকদের কে সার বীজ কীটনাশক ও জমি আন্তঃপরিচর্চার জন্য নগদ অর্থ।
কৃষি অফিস আরো জানায়,অনেক কৃষক নিজ উদ্যোগে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে এবং কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রায়হান পারভেজ রনি বলেন, পরিত্যক্তনএইসব জমি অনাবাদি অবস্থায় ছিলো। কৃষকদের কে উদ্বুদ্ধ করিয়ে সেখানে প্রকল্প ও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এই অনাবাদি জমিকে ভুট্টা চাষের আওতায় নিয়ে এসেছি। অন্যান্য যেসব জায়গা পতিত আছে পর্যায়ক্রমে তা আবাদের আওতায় আসবে বলে তিনি মনে করেন। পাশাপাশি এলাকার কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে।