ময়মনসিংহের গৌরীপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে হেবা দলিল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন দলিল লেখক মো. সাইফুল ইসলাম। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রে জালিয়াতির মাধ্যমে হেবা দলিল নিবন্ধন করেছেন এবং এর আগেও একই ধরনের আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন।
জানা গেছে, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে গৌরীপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ৩১২২ নং একটি হেবার ঘোষণাপত্র দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়, যার দাতা ছিলেন মোছা. আয়েশা খাতুন এবং গ্রহীতা মো. রইছ উদ্দিন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী দাতার জন্ম তারিখ ১২/০৮/১৯৫৫ দেখানো হলেও, নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ১২/০৮/১৯৬৭। এই হিসাবে দাতা ও গ্রহীতা সহোদর ভাই-বোন হওয়া স্বত্বেও তাদের বয়সের ব্যবধান মাত্র ৪ মাস ১৭ দিন।
অভিযোগ রয়েছে, দলিল লেখক মো. সাইফুল ইসলাম দাতার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নতুন পরিচয়পত্র তৈরি করেন এবং সেই ভিত্তিতে দলিলটি রেজিস্ট্রি করান। এই ঘটনায় ২ নং গৌরীপুর ইউনিয়নের হিম্মতনগর ও ইসুলিয়া গ্রামের অসংখ্য বাসিন্দা জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগেও ২৯ মে ২০২২ সালে সাইফুল ইসলাম ২৪০৮ নং একটি সাব কবলা দলিলে শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রেজিস্ট্রি করিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় তাকে ৬ মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং পরে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ‘আন্ডারটেকিং’ দিয়ে পুনরায় কাজে যোগদান করার অনুমতি পান।
এব্যাপারে জানতে চাইলে দলিল লেখক মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে গৌরীপুর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো গোলাম হাচিবেশ শাহীদ মুন্সী বলেন, ' এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের পরেই জানা যাবে কে দোষী, কিংবা কে নির্দোষ।
এ বিষয়ে গৌরীপুর সাব-রেজিস্ট্রার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, “আমি দাতা, গ্রহীতা ও দলিল লেখককে গত ৭ মে ২০২৫ তারিখে অফিসে হাজির হওয়ার জন্য লিখিত নোটিশ দিয়েছি। তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, এই ঘটনাটি দলিল লেখকদের মধ্যে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করছে, যা সাধারণ জনগণের সম্পত্তির নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় রাজস্ব উভয়ের জন্য হুমকি স্বরূপ।###