ময়মনসিংহের গৌরীপুরে রোববার (২৩ মার্চ/২৫) ভিজিএফ চালবঞ্চিত হওয়ায় শালিহর ছায়ানীড় আবাসন প্রকল্পের লোকজন উপজেলা পরিষদের সামনে ‘ভিজিএফের চাল’ দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। মিছিল শেষে ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চালের দাবিতে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নে শনিবার (২২ মার্চ/২৫) চাল বিতরণ করা হয়। তবে এ ইউনিয়নের নিজেদের ঘরবাড়িহীন অসহায় হয়ে আশ্রয় নেয়া শালীহর ছায়ানীড় আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা চাল পায়নি। এতে তারা বিক্ষুব্দ হয়ে রোববার শহরে ও উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। এ প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি মো. জমশেদ আলী জানায়, এ আবাসন প্রকল্পটি ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদে ১নং ও ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ি-ভিটেমাটিহীন অসহায় পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে। ওরা নি:স্ব। ২/৩দিন ধরে ঈদের চালের জন্য যোগাযোগ করেছি। চাল না দেয়ায় আবাসনের বাসিন্দারা বিক্ষুব্দ হয়ে পড়েছেন। আবাসন প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া জানান, এখানে যারা বাস করে তারা অতিদরিদ্র শুধু নয়, ছিন্নমূল-দরিদ্র। ওরা চাল পাবে না, তাহলে চাল পাবে কারা? সমাবেশ বক্তব্য রাখেন আবাসনের বাসিন্দা আব্দুল সালাম, মতিউর রহমান, পারভীন আক্তার, শহিদুল ইসলাম, লাইলী আক্তার, সুফিয়া আক্তার, রহিমা আক্তার, ফিরুজা বেগম, শামসুন নাহার, সুরুজ আলী প্রমুখ। তাদের বলেন, যতক্ষন পর্যন্ত চাল না পাবো, ততক্ষন পর্যন্ত এ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে আমরা যাবো না। 
এ প্রসঙ্গে ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হযরত আলী জানান, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকায় লিখিতভাবে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইউপি সচিব) নিকট চাল বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম রিয়াদ জানান, আমাকে মাত্র ১০০কার্ড দেয়া হয়েছে। সেগুলো বিতরণ করে দিয়েছে। মানুষের যে চাহিদা তার তো পুরণ করা সম্ভব না। ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, ইউপি সদস্যদেরও দেয়া হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলের লোকজনকেও দেয়া হয়েছে। আমরা এখন কী; করবো?
অপরদিকে উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সূর্যোদয়ের পর থেকে লোকজন এসে ভিজিডি’র চালের জন্য ভিড় করে। রুকনাকান্দার আলেকজান (৬০) জানায়, সকালে এসেছে। শুনেছি, কার্ড দিবে, চাল দিবে। এখন তো কেউ আসে নাই। চরশ্রীরামপুরের আব্দুল খালেক বলেন, চাল দিবো, সেই জন্য এসেছি। চরঘোড়ামারা গ্রামের আছিয়া খাতুন (৪৫) জানায়, গতবার পাইছি, সবাই বলতাছে চাল দিবো, সে জন্য এসেছি। গয়েসখিলা গ্রামের দোলেনা খাতুন, জাহানারা বেগম জানায়, চাল নিতে আইসি, আগে কার্ড দিবো শুনেছি। এখন কিছুই পাইনি। দিনশেষে শূন্যব্যাগ হাতে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়, তাঁতকুড়া গ্রামের আছমত আলী, সিরাজুল ইসলাম, মামদীপুরের আলেয়া খাতুন, কদিম ডৌহাখলার নুরজাহান, ছোলেমা খাতুন, হাজেরা খাতুনকে। এ প্রসঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে জানা যায়, এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ুম একটি হত্যা মামলায় জেলহাজতে রয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মাহতাব উদ্দিনের মুঠোফোনে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।