চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী অংশে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ নিষিদ্ধ ৩ চাকার যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।এবং সারিবদ্ধ ভাবে না দারিয়ে দোহাজারীর প্রধান মহা সড়কটির বেশির ভাগ জায়গা দখল করে রেখেছে, এতে সড়কে বর্তমানে আতঙ্ক হয়ে উঠছে,৩ চাকার এই যানবাহন। ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দোহাজারী সহ কেরানিহাট এলাকায় প্রতিদিন যানজট বাড়ছে। বাসের যাত্রীরা যানজটে আটকা পড়ে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে সারা দিন রোজা রেখে ইফতার করতে হচ্ছে রাস্তায় অপরদিকে সিএনজি অটোরিকশা যাত্রী বহন করে বড় গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে। প্রতিদিনই সড়কে শত শত অবৈধ যানবাহন চলাচল করলেও হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের নেই কোন রকমের ব্যবস্থা। অথচ দোহাজারী মূল সড়কের থেকে মাএ কয়েকগজ দূরে পুলিশ ট্রাফিক বক্সে ,তবুও যানযট নিরাসনে দেখা যায় না কোন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য কে,ফলে দোহাজারী মহাসড়কে অবৈধ গাড়ি চলাচল দিন দিনই বাড়ছে। দোহাজারী হাইওয়ে থানার পুলিশের সদস্যরা কেরানিহাটের নতুন রেল ক্রোসিং ও জাফর আহমদ চৌধুরী কলেজের সামনে সড়কে বেশির ভাগ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে। তবে মূলত হাইওয়ে পুলিশের অবহেলার সুযোগে নিরবিধায় চলছে ৩ চাকার এসব যানবাহন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অটোরিকশাসহ নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে প্রতিনিয়ত প্রাণহানিসহ আহতের ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় কেউ মারা যাচ্ছেন আর যারা বেঁচে ফিরছেন তাদের অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ হচ্ছে সারাজীবনের জন্য। সর্ব শেষ গত ২৭ জানুয়ারির-সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে মহাসড়কের -দোহাজারীর বিওসির মোড় এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে অটোরিকশার যাএি মো. নাঈম ইসলাম (৩১) নিহত হন ও তিনজন গুরুতর আহত হন। মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ হলেও প্রকাশ্যে হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়ে হরহামেশা চলছে এসব যানবাহন। মহাসড়কে ৩ চাকার এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, ট্রলি দূরপাল্লার বাসগুলোর জন্য ভোগান্তি ও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যানবাহন গুলো মহা সড়কে উঠতে না দিলে বা মহা সড়কে একবারে বন্ধ করলে দুর্ঘটনা কমবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিছু দূরপাল্লার বাসচালকদের সাথে মরনিংপোস্টের প্রতিনিধি কথা বললে দূরপাল্লার চালকরা জানান , ৩ চাকার চালকদের অদক্ষতা, ধীরগতি, ভারসাম্যহীনতা মহাসড়কে চলা ঝুঁকিপূর্ণ। সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ৩ চাকার অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে নিষিদ্ধ হলেও হাইওয়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকই চলছে। এদের নিয়ন্ত্রণ খুব জরুরি। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। তাছাড়া সরজমিন দেখা যায়, মহাসড়কের চন্দনাইশের গাছবাড়ীয়া থেকে দোহাজারী কেরানীহাট ও লোহাগাড়ার আমিরাবাদ পর্যন্ত শত শত ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা-সিএনজি অটোরিকশা ও ভটভটি অবাধে চলাচল করছে। বাজারগুলোতে যত্রতত্র অটোরিকশা জটলা করে মহাসড়ক দখলের ফলে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়ছে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী। এসব ৩ চাকার যান সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। একজন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী জানান, এ অঞ্চলে মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ ৩ চাকার অবৈধ যানবাহন। ইজিবাইক ও ভটভটি এমনভাবে চলে যেন তারা বিমান চালাচ্ছে। প্রায় সময় বড় গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে ৩ চাকার রিকশা-সিএনজি দুর্ঘটনা হয়। এ জন্য ছোট গাড়িতে করে মহাসড়কে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। মহাসড়ক নিরাপদ করতে দ্রুতগতি ও ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক সড়ক বা লেন থাকতে হবে। তা না হলে কোনোভাবেই যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ হবে না। একাধিক বাস চালক বলেন, এই মহাসড়ক দিয়ে সবসময় আতঙ্কের মধ্যে গাড়ি চালাই। ছোট গাড়িগুলো খুব যন্ত্রণা দেয়। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সামনে পেছনে না দেখে ডানে-বামে মোড় নেয়। ফলে গাড়ির সঙ্গে লেগে যায়। এসব অবৈধ যানবাহন চালকদের দোষে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাসসহ অন্য গাড়ির মালিকরা। তাছাড়া কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা বিভিন্ন বাসের চালকরা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে এখন ৪-৫ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা গেলে আরো দুই ঘণ্টা কম সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে। যাত্রীরাও চরম ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। মহাসড়কের কেরানীহাট ও দোহাজারী এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, অনেক বছর ধরে দেশের সব মহাসড়কে ৩ চাকার যান নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষিদ্ধ জেনেও সংসার চালাতে যাত্রী টানতে মহাসড়ক ছাড়া বিকল্প পথ নেই। জীবিকার তাগিদে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মহাসড়কে চলাচল করেন। এভাবে মহাসড়কে গাড়ি না চালিয়ে তাদের কোনো উপায় নেই।